পুবের কলম প্রতিবেদকঃ চারটে ডান্ডা নিয়ে বেরিয়ে সবাই ভাবছে তৃণমূল উঠে গেছে। পুজো কাটলেই আবার ময়দানে নামবে তৃণমূল। যারা এসব ভাবছেন তারা ভুল। ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল। বৃহস্পতিবার ভবানীপুরে বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চ থেকে লড়াইয়ের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি এও বুঝিয়ে দিলেন উৎসবের মরশুমে তৃণমূলের রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয় থাকার অর্থ তৃণমূল হেরে গিয়েছে এমনটি ভাবার কারণ নেই। পুজো মিথ্যে অন্য ভূমিকায় দেখা যাবে রাজ্যের শাসক দলকে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন পুজোর কদিন তৃণমূল কংগ্রেস রাজনীতি করতে চায় না। যেহেতু তৃণমূল কংগ্রেস মনে করে ধর্ম যার যার নিজের উৎসব সবার। তাই উৎসবের এই মরশুমে মানুষের পাশে থেকে জনসংযোগই দলের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু উৎসবের মরশুমে দলকে দেখে যারা উৎফুল্ল হচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্যে তৃণমূল সুপ্রিমোর বার্তা পুজো মিটলেই আবার স্বমহিমায় ফিরবে ঘাসফুল।
প্রসঙ্গত, সরকারিভাবে প্রতিবছর ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিজয়া সম্মেলনীর আয়োজন করলেও, দলের ব্যানারে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই ধরনের বিজয়া সম্মেলনী এই প্রথম। তার চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আগাগোড়াই এই বিজয়া সম্মেলনের কার্যক্রম ছিল রাজনৈতিক বক্তব্যে ঠাসা।
ভবানীপুরের এই বিজয়া সম্মেলনীতে দাঁড়িয়ে বিজেপির রাজনীতি নিয়ে এ দিন সরব হয়েছেন লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। আর সেই মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বার্তা কোনো সন্দেহ নেই দলীয় কর্মী সমর্থকদের মনোবলকে আরো চাঙ্গা করবে।
এই মুহূর্তে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা, গরু এবং কয়লা চুরি নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতায় যখন রাজ্যের শাসক দলকে একটু ব্যাকফুটে বলে মনে হচ্ছে সে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা অবশ্যই আলাদা তাৎপর্য রাখে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বুধবার ইকো পার্কের মতোই এদিনও মুখ্যমন্ত্রীর গলা থেকে শোনা গিয়েছে রাজ্যের উন্নয়নের ফিরিস্তি। দুর্গা পুজোয় যেভাবে পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে তাও তুলে ধরেছেন তিনি। এই মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজোয় এই যে বিশাল অংকের লেনদেন তার বেশিরভাগটাই গিয়েছে গরিব মানুষের পকেটে। এরপরেও যারা সমালোচনা করতে চাইছেন সমালোচনা করবেন। দল তার কাজ চালিয়ে যাবে।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, আমাদের পার্টিতে সবকিছুই ওপেন। মুক্ত হওয়ার মতো চলি আমরা। তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখে মনটা ভরে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এমন কোথাও আছে দেখান যেখানে ঈদের নামাজ হয় আবার দুর্গাপুজোর কার্নিভালও হয়। একমাত্র হয় রেড রোডে। এটাই বাংলা। আমি বলছি সবাই ভালো থাকুন। সকলে মিলে মিশে থাকুন। ধর্ম যার যার নিজের। তবে উৎসব কিন্তু সবার।