পুবের কলম ওয়েবডেস্ক ¬ জাতীয় দলের জার্সিতে রেকর্ড গড়ার ম্যাচে ঝলসে উঠলেন লিওনেল মেসি। মূলত তাঁর ম্যাজিক ফুটবলে ভর করে বলিভিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেল আর্জেন্টিনা। ম্যাচে জোড়া গোল করলেন মেসি। আবার গোলের জন্যে বল সাজিয়েও দিলেন।
মঙ্গলবার ভোরের (ভারতীয় সময়) ম্যাচে দেশের জার্সিতে রেকর্ড গড়লেন মেসি। আর্জেন্টিনার হয়ে ১৪৮ তম ম্যাচটি খেলে ফেললেন তিনি। তিনি ভেঙে দিলেন জাভিয়ের মাসচেরানোর রেকর্ড। তিনি আকাশি সাদা জার্সিতে খেলেছেন ১৪৭টি ম্যাচ। যা এতদিন ছিল আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড।
এই ম্যাচের আগেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত করে ফেলেছিল লিওনেল স্কালোরির দল। নিয়মরক্ষার ম্যাচে আকর্ষণ ছিল– মেসির রেকর্ড গড়া আর দ্বিতীযüত– অতীতে বলিভিয়ার কাছে মাঝেমধ্যে যে আর্জেন্টিনা হোঁচট খেয়েছে– এবারও সেই রকম কিছু হয় কি না– সেটা দেখার। এদিকে ইতিমধ্যেই গ্র&প পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বলিভিয়ার। তাই তাদের সামনে সেরকম কোনও লক্ষ্য ছিল না।
এদিন শুরু থেকেই ম্যাচের দখল নিযেü নেন মেসি– আগুযেüরোরা। ৬ মিনিটের মাথায় বক্সের ঠিক বাইরে ডান দিকে মেসিকে বল বাড়ান অ্যাঙ্গেল করে। বল ধরেই অনবদ্য এক টার্ন করে বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে তিনি বল বাড়ান বাম দিক থেকে ঢুকে পড়া পাপু গোমেজকে। বাম পায়ের ভলিতে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন পাপু । এই গোলের পরেও ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতেই রাখে লিওনেল স্কালোনির ছেলেরা। ৩৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি। এই সময় পাপু গোমেজকে বক্সের মধ্যে অবৈধ ভাবে ফেলে দেন বলিভিয়ার দিয়েগো বেজারানো। রেফারি পেনাল্টি দিতে দেরি করেননি। স্পট কিক থেকে গোল করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। মেসি ম্যাজিকের অবশ্য সেখানেই শেষ নয়। ম্যাচের ৪২ মিনিটে একটি অনবদ্য গোল করে দলের জয় কার্যত নিশ্চিত করে দেন তিনি । এক্ষেত্রে প্রায় মাঝমাঠ থেকে মেসির উদ্দেশ্যে বল বাড়ান সর্জিও আগুয়েরো। সেই বল ধরে গতিতে বলিভিয়ার ডিফেন্ডারদের পিছনে ফেলে বাম পায়ের হওয়ায় ভাসান শটে বল জালে পাঠিয়ে দলকে হাফ টাইমের আগেই ৩-০’এ এগিযেü দেন মেসি।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমনের ধারা বজায় রেখে চলে আর্জেন্টিনা। তবে ম্যাচের ৬০ মিনিটে খেলার গতির বিরুদ্ধে গোল করে ব্যবধান কমান এরউইন সভিদ। এক্ষেত্রে আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডাররা নিজেদের দায় এড়াতে পারেনা।
এরপরে বলিভিয়াকে অবশ্য আর কোনও সুযোগ দেয়নি আর্জেন্টিনা। উল্টে তাদের ঘাড়ে আরও একটি গোল চাপিয়ে দেয় নীল সাদা জার্সিধারিরা। আর এই গোলের কারিগরও মেসি। ৬৫ মিনিটে বলিভিয়া বক্সের বাম দিকে আকুনাকে বল বাড়ান মেসি। আকুনার শট আংশিক ভাবে প্রতিহত করেন বলিভিয়ার গোলরক্ষক। ফিরতি বলে গোল করে জন মার্টিনেজ। এরপরেও আর্জেন্টিনার সামনে গোল করার সুযোগ এসেছিল– তবে ব্যবধান আর বাড়েনি। এদিন এই ম্যাচে মেসি-আগুয়েরো জুটিতে আরও একটি রেকর্ড হল। দুজনে একসঙ্গে প্রথম এগারোয় খেলেছেন এমন ম্যাচে দু’জনের জুটিতে এল ১১৫টি গোল। যা লাতিন আমেরিকান ফুটবলের ইতিহাসে প্রথম। মেসির গোল ৭৪টি– আগুয়েরোর ৪১টি। মেসি-আগুয়েরো জুটি ভেঙে দিলেন উরুগুয়ের কাভানি-সুয়ারেজ জুটির ১১৪ গোলের রেকর্ড। কাভানির ছিল ৫১টি ও সুয়ারেজের ৬৩ টি। কাভানি এদিন উরুগুয়ের হয়ে গোল করলেও সুয়ারেজ এদিন উরুগুয়ের প্রথম একাদশে ছিলেন না। তিনি কাভানির বদলি হিসেবে নেমেছিলেন। কাজেই মেসি-আগুয়েরো জুটি পেরিয়ে গেলেন কাভানি-সুয়ারেজ জুটিকে।
এই জয়ের ফলে গ্রুপ ‘এ’র শীর্ষে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে গেল আর্জেন্টিনা। শেষ আটে মেসিদের প্রতিপক্ষ ইকুয়ে ডর।