পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ আরও একবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঢালাও প্রশংসা করলেন শিবসেনা সুপ্রিমো তথা মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন– মমতা একাই লড়ে জিতেছেন। মমতা একাই বিজেপিকে পরাজিত করেছেন।
শনিবার তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রশংসা করে উদ্ধব বলেন– ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই নির্বাচনে লড়েছেন। জিতেছেন। বিভিন্ন ধরনের তির্যক মন্তব্য ও ঘৃণ্য আক্রমণ সত্ত্বেও বাংলা তার ইচ্ছাশক্তি দেখিয়েেছ। বন্দে মাতরম এই দু’টি শধে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবনীশক্তি প্রদান করেছিল বাংলা। দেশের স্বাধীনতার জন্য কী করা দরকার– তা দেখিয়ে দিয়েছিল।’ পশ্চিমবঙ্গের জাত্যাভিমানের প্রশংসা করে শিবসেনা সুপ্রিমো যখনই কোনও অঞ্চলের আত্মসম্মান বিপন্ন হয়ে পড়ে– যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত আসে– তার বিরুদ্ধে একাগ্র চিত্তে একাই লড়াইয়ের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ আজ ‘একলা চলো রে’-র প্রকৃত উদাহরণ। সব ধরনের আক্রমণ দেখেছে বাংলা। কিন্তু প্রত্যেক বাঙালি তার আত্মসম্মান রক্ষায় সতর্ক ছিল। নিজেদের আত্মসম্মান কী ভাবে রক্ষা করতে হয় তার উদাহরণ বাংলা রেখেছে। উদ্ধব বলতে চেয়েছেন– গোবলয়ের রাজনীতি বাংলায় চালাতে চেয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু– ভোটে বাংলার মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে তারা অন্যদের থেকে আলাদা। বাঙালি আবেগ বাংলার সবথেকে বড় সম্পদ। ‘আমরা বাঙালি’—এই জাত্যাভিমানকে বাঙালিরা কখনও বিসর্জন দেয়নি। তারা দেখিয়ে দিয়েছে বাংলা সংস্কৃতি– ঐতিহ্যর উপর আঘাত তারা বরদাস্ত করবে না।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন– ‘আমরা মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। বাংলা এবং মহারাষ্ট্রের দীর্ঘ বন্ধুত্ব রয়েছে। আর বাংলার লড়াই যে অন্যদের এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখাচ্ছে– তা দেখে ভাল লাগছে। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় কীভাবে বিজেপিকে রুখে দেওয়া যায় সেই পথ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়ে দিয়েছেন।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে– যেভাবে বিজেপি বাংলা দখলে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিল। বিভিন্ন রাজ্য থেকে বড় বড় বিজেপি নেতারা এসে বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার করে গিয়েছেন। আর মোদি-শাহ-নাড্ডারা তো ছিলেনই। সর্বশক্তি প্রয়োগ করে প্রচারে কোনও খামতি রাখেনি গেরুয়া শিবির। বাংলা দখলে চারদিক থেকে ঝাঁপিয়ে ছিল বিজেপি। একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে যেভাবে রুখে দিয়েছেন তা সারা দেশে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি সারা দেশে বিজেপি বিরোধী অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন মমতা। উদ্ধবের মন্তব্য থেকে ইঙ্গিত মিলেছে– বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যদি দেশে বিজেপি বিরোধী মঞ্চকে নেতৃত্ব দেন তাতে আপত্তি জানাবে না শিবসেনা। যদিও সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে সুখেন্দু শেখর রায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন– প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে নেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।