পুবের কলম প্রতিকেদক: বয়সসীমা বাড়িয়ে আর উপাচার্য পদে নিয়োগ করা যাবে না। এক রায়ে এ কথা জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। উল্লেখ্য, ২০২১-এর ডিসেম্বরে রাজ্যের তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই তালিকায় ছিল একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। মঙ্গলবার এক রায়ে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের ক্ষমতা নেই রাজ্যের।
এদিন এক রায়ে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ-এর নির্দেশ, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্যদের একমাত্র নিয়োগ করতে পারবেন আচার্য। উপাচার্য নিয়োগ করার কোনও ক্ষমতা রাজ্য সরকারের হাতে থাকবে না। একই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের নিয়োগ করা সকল উপাচার্যকে পদ থেকে খারিজ করতে হবে রাজ্য সরকারকে।
আদালতের এই রায় প্রসঙ্গে শিক্ষামহলের একাংশের দাবি, সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে আচার্য তথা রাজ্যপাল একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তিন মাসের জন্য পুনর্নিয়োগ করেছিলেন। যা ‘বৈধ’। আদালত বলেছে, উপাচার্যদের নিয়োগ করতে পারবেন আচার্য (রাজ্যপাল)।
তৎকালীন আচার্য জগদীপ ধনকর জানিয়েছিলেন ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ অবৈধ। রাজ্যপালের দেওয়া তালিকায় গৌড়বঙ্গ, আলিপুরদুয়ার, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও ছিল। এরপর কলকাতা, যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি-রবীন্দ্রভারতী-সহ রাজ্যের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টে অনুপম বেরা নামে এক জনৈক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন।
এদিন আদালত সাফ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের এক্তিয়ার রাজ্যের নেই। এর আগে এই ধরনেরই একটি মামলায় হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজে থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।
বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যের তরফে নিয়োগ করা উপাচার্যদেরও এ বার পদ থেকে খারিজ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পর জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, ‘রাজ্য যে বেআইনি ভাবে উপাচার্যদের নিয়োগ করেছিল, তা স্পষ্ট। আমরা তা নিয়ে মামলা দায়ের করেছিলাম। আদালতের রায়ে আমরা খুশি। ’ এই রায় প্রসঙ্গে অধ্যাপকদের বক্তব্য, নিয়ম মেনেই নিয়োগ হোক। তাছাড়া বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই। সেগুলিতে যাতে সার্চ কমিটি গঠন করে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়, তার ব্যবস্থা করার জন্য রাজ্য সরকারকে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে।