পারিজাত মোল্লা : শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল ও পুনর্নিয়োগ মামলায় নির্দেশ টি খারিজ করলো । এর ফলে এখনই নতুন করে নিয়োগ করা যাবে না। এর পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
দ্রুত সেই মামলার নিষ্পত্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।আদালত সুত্রে প্রকাশ, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথমে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে সেই সংখ্যা সংশোধন করে ৩২ হাজার হয়। সিঙ্গেল বেঞ্চ সেসময় জানিয়েছিল, এই শিক্ষকরা চার মাস স্কুলে পড়াবেন। কিন্তু তাঁদের প্যারা টিচারদের স্কেলে বেতন নিতে হবে। তাঁদের পদও হবে প্যারা টিচারের।
সেই সঙ্গে দ্রুত শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে’।৩২ হাজার শিক্ষক বাতিল মামলায় অভিযোগ উঠে, ‘ গত ২০১৬ সালে নিয়োগ পাওয়া এই শিক্ষকদের অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি’। নিয়োগে একাধিক অস্বচ্ছতার অভিযোগও উঠেছিল। তবে তাঁদের চাকরি ফিরে পাওয়ারও একটি সুযোগ দেওয়া হয়।
সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছিল, -‘ পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারবেন বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকরাও। পরীক্ষায় পাশ করলে ফের চাকরি পাবেন তাঁরা’। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন চাকরি হারানো প্রাথমিক শিক্ষকরা। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, -‘ তাঁদের এখনই পার্শ্বশিক্ষকের মতো বেতন নিতে হবে না। সম্পূর্ণ বেতনই দেওয়া হবে’।
তবে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।ডিভিশন বেঞ্চের এই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন চাকরিহারা প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি চলে সুপ্রিম কোর্টে । তাতে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ করে দেয়। এরফলে আপাতত স্বস্তিতে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক।
নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে না তাঁদের। এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে কে মহেশ্বরী ও কে ভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চ হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ করলো । বেআইনি ভাবে নিয়োগ পাওয়া প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ, সেই নির্দেশই এদিন সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে ।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরিহারা প্রার্থীরা । ডিভিশন বেঞ্চ চাকরি বাতিলের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল । কিন্তু চাকরি বাতিলের পর নতুন করে ইন্টারভিউ নেওয়ার যে নির্দেশ সিঙ্গল বেঞ্চ দিয়েছিল, তা বহাল রাখে হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ ।এর পরে চাকরিহারা প্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন । শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট । কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকেই এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ।