পুবের কলম প্রতিবেদক: দেশের বর্তমান আইন অনুসারে গর্ভস্থ ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধ। আসলে কন্যাভ্রুণ হত্যা রুখতেই এই আইন। তবে কিছু কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অবৈধভাবে ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয় বলে অভিযোগ। এমনটা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে বিশেষভাবে সতর্ক হতে চাইছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
এর জন্য বিভিন্ন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নির্দেশ পাঠিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। তাতে বলা হয়েছে, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা এটা নিশ্চিত করবেন যে, ইমেজিং ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলিতে অবৈধ কিছু হচ্ছে না। আরও যাতে নজরদারি চালানো হয় সে কথাও বলেছে স্বাস্থ্যভবন।
স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সমস্ত ব্লক, মহকুমা এবং বিভিন্ন পৌরসভা এলাকায় জেলা পরিদর্শন এবং পর্যবেক্ষণ কমিটি ভিজিট করবে। দেখতে হবে প্রেগনেন্সি অ্যান্ড প্রি-নেটাল ডায়াগনস্টিক টেকনিক আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে কিনা। হেলথ ডাইরেক্টের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) এ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছেন।
সাম্প্রতিক একটি নোটিশে সমস্ত জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ইমেজিং ক্লিনিকগুলিতে জেলা পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ কমিটি পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, পরিদর্শক টিম ইমেজিং ক্লিনিকগুলিতে যাবে এবং সেখানে কোনও অসঙ্গতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে।
প্রসবপূর্ববর্তী লিঙ্গ নির্ধারণের ঘটনা যাতে না ঘটে তা দেখতে হবে। পরিদর্শক দলটি ইমেজিং ক্লিনিকগুলি থেকে ডেটা সংগ্রহ করবে এবং কোনও কেন্দ্রে কোনও নিয়মবিরুদ্ধ কাজ হয়েছে কিনা তা যাচাই করবে।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যভবনের ডিরেক্টর ডা. সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানান, এটি একটি রুটিন প্রক্রিয়া৷ প্রেগনেন্সি অ্যান্ড প্রি-নেটাল ডায়াগনস্টিক টেকনিক আইন লঙ্ঘন না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য রাজ্যজুড়ে পরিদর্শন করা হয়। প্রায় ১ শতাংশ ক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতা পাওয়া যায় এবং আইনের বিধান অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
অন্যদিকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইউএসজি, এমআরআই এর মতো ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের যন্ত্রের নির্মাতাদের প্রত্যেককে রেজিস্ট্রেশন বা নথিভুক্ত হতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করতে হবে
এইসব যন্ত্রের প্রত্যেক আমদানিকারী পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীদের। যে সব মেডিক্যাল টেকনোলজস্ট যন্ত্রগুলি চালান, তাঁদের নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। না হলে ইউএসজি, এমআরআই ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের কোনও যন্ত্রই কেনাবেচা বা মেরামতি কিছুই করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, প্রেগনেন্সি অ্যান্ড প্রি-নেটাল ডায়াগনস্টিক টেকনিক আইন ১৯৯৪ সালে প্রণীত হয়েছিল। ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য প্রসবপূর্ব ডায়গনিস্টিক কৌশলগুলিকে নিষিদ্ধ করা ও কন্যাভ্রূণ হত্যার রুখতে বড় ভূমিকা পালন করে এই আইন। আইনটি ২০০৩ সালে সংশোধিত এবং কার্যকরভাবে কার্যকর করা হয়েছিল।
পরে ২০১১ সালে আইন আরও কঠোর করা হয়। সংশোধিত আইনে কোনও অনিয়ম পাওয়া গেলেই সংশ্লিষ্ট রেডিওলজিস্ট, সোনোলজিস্ট বা গাইনোকোলজিস্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।