পুবের কলম প্রতিবেদকঃ শিক্ষাব্যবস্থাকে দেউলিয়া করে দিচ্ছেন রাজ্যপাল। জেমস বন্ড মার্কা আচরণ করছেন আচার্য। রাজ্যপাল হচ্ছেন কৃষ্ণচন্দ্রের রাজ্যসভার শ্রেষ্ঠ বিদূষক। সোমবার আচার্য তথা রাজ্যপালের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পাঠানো নির্দেশিকা, উপাচার্য নিয়োগ প্রসঙ্গে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন তিনি বলেন, সোমবারই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় সহ ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এক্ষেত্রেও, রাজ্যের সঙ্গে কোনওরকমের আলোচনা করা হয়নি বলেই সূত্রের খবর। রাজ্যপালের এই নিয়োগকে ঘিরে প্রাক্তন উপাচার্য থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারও বলেছেন রাজ্যপাল শিক্ষাব্যবস্থাকে অচল করার লক্ষ্যে উঠে-পড়ে লেগেছেন।
এদিন ব্রাত্য বসু বলেন, ‘গত কয়েকমাস ধরে আমাদের মনে হচ্ছিল রাজ্যপাল সিস্টেম বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর। তাঁর আচরণ সেটাকে সিলমোহর দিচ্ছে। রাজ্য সরকারকে বাইপাশ করে ক’নও উপাচার্য নিয়োগ করছেন। আবার কখনও বিতাড়িত করছেন। তালিবানি শাসন চালাচ্ছেন।’
শিক্ষামন্ত্রীর অভিযোগ, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রান্ট কমিশেনের (ইউজিসি) বিধি মানছেন না রাজ্যপাল। এমনকি,তোয়াক্কা করছেন রাজ্য সরকারের আইনকেও। শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘তিনি নির্বাচিত রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে এমন আচরণ করতে পারেন না। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
রাজ্যপালের ভূমিকায় ক্ষুদ্ধ হয়ে বিহারের রাজ্যপালের সঙ্গে তুলনা করেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্য বসু বলেন, সেখানেও অ-বিজেপি সরকার। এখানেও একই ঘটনা। কেন্দ্র সরকার এজেন্টদের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করছে। যাদের সঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার যোগ নেই, তাঁরা উপাচার্য হচ্ছেন। জগদীপ ধনখড় কখনও এমন আচরণ করেননি। ফাইল চালাচালি হত। তর্কাতর্কিও হত। আলোচনার পরিসর খোলা থাকত। আর ইনি জেমস বন্ড মার্কা আচরণ করে চলেছেন। ফ্রেব্রুয়ারি মাসে ওঁর সাথে আমার শেষ কথা হয়েছে। আমি ফাইল পাঠাচ্ছি, মানে আমি আলোচনা চাইছি। ভবিষ্যতেও আলোচনা চাইবো।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্র্বতী উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য প্রাণী মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল।
উল্লেখ্য,রাজ্যপাল কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নেই, সেখানে তিনি নিজেই উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন। এতে সংবিধান লঙ্ঘন হচ্ছে বলে জানিয়েছে শিক্ষাবিদ মহল।