পুবের কলম প্রতিবেদকঃ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণের হার কিছুটা কমলেও এবার হাই মাদ্রাসার ফলাফলে পাশের হার সামান্য বাড়ল। গত বছর হাই মাদ্রাসায় পাশের হার ছিল ৮৭.০২ শতাংশ। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৮৮.০৯ শতাংশ। গত বছরের থেকে প্রায় ১ শতাংশ বেশি। আলিমে পাশের হার ছিল ৮৯.৮৭ শতাংশ, এ বছর পাশ করেছে ৯০.৬৯ শতাংশ। ফাজিলে গত বছর পাশের হার ছিল ৯০.৬৮ শতাংশ, এবছর পাশের হার বেড়ে হয়েছে ৯১.১৫ শতাংশ।
এ বছর মেধা তালিকায় হাই মাদ্রাসা, আলিম, ফাজিল মিলে মেধা তালিকায় রয়েছে ৩৭ জন। এদিন ফল প্রকাশের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হাইমাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল পরীক্ষার্থীকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আগামী দিনগুলি তোমাদের সাফল্যের সঙ্গে পূর্ণ হোক।’
এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিলের মেধাতালিকাভুক্ত কয়েকজনকে ফোন করার পাশাপাশি তাদের সকলকে লিখিত শুভেচ্ছা বার্তাও পাঠিয়েছেন।
এ বছর হাইমাদ্রাসা মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৫ হাজার ২০৬। এর মধ্যে পাশ করেছে ৩১ হাজার ১৪। ছাত্র করেছে ৯০.০২ শতাংশ। ছাত্রী পাশ করেছে ৮৭.১২ শতাংশ। হাই মাদ্রাসায় প্রথম হয়েছে আসিফ ইকবাল (৭৮০)। দ্বিতীয় স্থানে নাসিরউদ্দিন মোল্লা (৭৭৫)। তৃতীয় স্থানে মুকতাদুর রহমান (৭৭৪)।
আলিমে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৮ হাজার ৩০৩। এর মধ্যে পাশ করেছে ৭ হাজার ৯৮৪। পাশের হার ৯০. ৬৯ শতাংশ। ছাত্র পাশ করেছে ৯৬.০৬ শতাংশ, ছাত্রী পাশ করেছে ৮৫.৫৩ শতাংশ। আলিমে প্রথম স্থানে মুহাম্মদ সুজাউদ্দিন ( ৮৪৫)। দ্বিতীয় স্থানে কারিমুল ইসলাম মণ্ডল এবং আবদুল হালিম (৮৪৩)। তৃতীয় স্থানে আবদুর রহমান (৮৩৯)।
ফাজিলের মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৫ হাজার ৬৩৩। এর মধ্যে পাশ করেছে ৫ হাজার ১৩৫। পাশের হার ৯১.১৫ শতাংশ। ফাজিলে প্রথম ফামিম আখতার (৫৬৫), দ্বিতীয় মোজাম্মেল মল্লিক (৫৫১), তৃতীয় ইয়াজ আহমেদ (৫৪৯)।
মাদ্রাসায় এ বছর অমুসলিম পরীক্ষার্থী ছিল ৯৩৪। এর মধ্যে ছাত্র পাশ করেছে ৭৪৯। পাশের হার ৮০.১৯ শতাংশ। উর্দু মিডিয়াম থেকে পরীক্ষার্থী ছিল ৯৫১। এর মধ্যে পাশ করেছে ৮২৪। পাশের হার ৮৬.৬৪ শতাংশ। অমুসলিমদের মধ্যে শীর্ষ স্থানে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের আগরডাঙা হাই মাদ্রাসার নিশা মাঝি (৬৪৫)। উর্দু মাধ্যমের প্রথম হুগলির আদাবি সোসাইটির ফারহাদ পারভিন (৬৮৪)।
এ রাজ্যে ইংরেজি মিডিয়াম মাদ্রাসা চালু রয়েছে ১২টি। এর মধ্যে পরীক্ষার্থী পাশ করেছে ৫০ জন। মুর্শিদাবাদ মডেল মাদ্রাসার ইউসুফ আলি আহমেদ সরকার শীর্ষ স্থানে (৭৩৭)।
এদিন ফল প্রকাশের পর সাংবাদিক সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি ড. আবু তাহের কমরুদ্দিন বলেন, ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। এ বছর ৪৮ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে। বাংলা, উর্দু এবং ইংরেজি ভাষার ৪২টি বিষয়ের উপর প্রশ্নপত্র তৈরি হয়েছিল। ওয়েবসাইটে ফলাফল দেখতে পাচ্ছে পরীক্ষার্থীরা। ওয়েবসাইট থেকেই মার্কশিট ডাউনলোড করা যাবে। একই সঙ্গে ওয়েবসাইটে বিভিন্ন স্কলারশিপের বিবরণ ও লিঙ্ক ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।
পর্ষদ সভাপতি জানান, রাজ্যের মধ্যে কালিম্পং, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রামে হাই মাদ্রাসা নেই। জেলা ভিত্তিক ফলাফলে পূর্ব মেদিনীপুর বেশি (৯৮.০৭ শতাংশ)। দ্বিতীয় আলিপুরদুয়ার, তৃতীয় উত্তর ২৪ পরগণা, চতুর্থ কলকাতা, পঞ্চম, পশ্চিম মেদিনীপুর। ফাজিল পরীক্ষায় এ বছর ১০০ শতাংশ পাশ করেছে কোচবিহার জেলায়।
পর্ষদ সভাপতি বলেন, এ বছর মীনা মঞ্চ, কণ্যাশ্রী, সবুজ সাথী, ইউনিসেফের উদ্যোগে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, স্মার্ট ক্লাস রুম, ছুটিতে পড়ুয়াদের বিভিন্ন অ্যাসাইনমেন্ট প্রভৃতি কারণে মাদ্রাসা ফল ভালো হয়েছে। পর্ষদ জানিয়েছে, এ বছর ফল প্রকাশের পর ১৫দিনের মধ্যে পিপিআর এবং পিপিএস এর জন্য আবেদন করতে হবে প্রার্থীদের।