শুভজিৎ দেবনাথ, গয়েরকাটা: বৃদ্ধা মা’কে গলার নলি কেটে খুন! ঘরের ভেতর থেকে উদ্ধার রক্তাক্ত দেহ। ঘটনায় গ্রেফতার মৃতার বড় ছেলে।চাঞ্চল্য ডুয়ার্সের গয়েরকাটায়। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বিকেলে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা-বাগানের বিঘা লাইনে। জানা গেছে, ঘরের ভেতরে গলার নলি কাটা মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় এক বয়স্কা বৃদ্ধা মহিলাকে। পাশেই পড়ে ছিলো ছুরি। যা দেখে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চা বলয়ে।
ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই এলাকায় ছুটে আসেন বিন্নাগুড়ি আউট পোস্ট ও বানারহাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, যেই মা দশমাস দশদিন গর্ভে ধারণ করে জন্ম দেয় সন্তানের। সেই জন্মদাতা মা যেনো আজ বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো বড় সন্তানের কাছে। পেছনে অর্থনৈতিক অভাব? নাকি সাংসারিক সমস্যা? যেই কারণই হোক না কেন তাই বলে শেষমেষ মাকেই হত্যা? এমনটা স্বপ্নেও কল্পনা করা যায় না।
চা বাগানের শ্রমিক মহল্লার জরাজীর্ণ বাড়িতেই , মা ,ভাই , ভাইয়ের স্ত্রী, ও তার পুত্র সহ মোট পাঁচ জনের বসবাস ছিলো বলেই জানা গিয়েছে। বিয়ে করেও সংসার করতে পারেনি বড় ছেলে। স্ত্রী কোনও কারণ বশত ছেড়ে চলে যায় বলেই পরিবার সূত্রে খবর। এদিন মেঝেতেই শুয়ে ছিলো সাধনী পান্না। ভিড় রাজ্যে কাজ করতেই তার বড় ছেলে। প্রায় ছয় মাস ধরে বাড়িতে। পরিবারে অর্থনৈতিক অনটন লেগেই ছিলো। তার মধ্যে বয়স্ক মায়ের বোঝা। এক বছরের বেশি সময় ধরে মা শয্যাশায়ী। মায়ের চিকিৎসার খরচ তুলতে অপারক হয়ে উঠছিল বলেই দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। তাই গলা কেটে মাকে খুন করে থাকতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকে। মৃতের নাম সাধনি পান্না (৭০)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বানারহাট থানার আই সি শান্তনু সরকার সহ বিন্নাগুড়ি ফাড়ির ওসি কুশাং টি লেপচা সহ পুলিশ কর্মীরা।
ঘটনায় বিজয় পান্না নামে মৃতার বড় ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, মৃতার ছোট ছেলে সুনীল পান্না সোমবার তার পরিবার নিয়ে একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে যান। এদিন ফিরে এসে বাড়িতে ঢুকতেই সে তার মা এর গলা কাটা দেহ দেখতে পান।
দেহের পাশেই পড়েছিল একটি ছুড়ি। সে সময় তার দাদা বিজয় পান্না বাড়ি ছিল না। বাড়ি এসে সুনীল পাড়ার একজনের কাছে শুনতে পান যে তার দাদা তার মা কে খুন করার কথা এক মহিলার কাছে স্বীকার করেছে। পরে তিনি পুলিশের কাছে নিজের দাদার বিরুদ্ধে তার মা কে মারার অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিজয় পান্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।