পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: নানা জটিলতার কারণে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু দফতরের অধীনে থাকা মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ পিছিয়ে রয়েছে। ফলে বিভিন্ন জেলায় পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরাও ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ।
পাশাপাশি রাজ্য সরকার মাদ্রাসাগুলিতে যে শিক্ষক বদলিতে সরলীকরণ করেছে তাতে বহু শিক্ষকই বদলি নিয়ে নিজ এলাকায় চলে গিয়েছেন। ফলে রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিতে অনেকটাই শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে।
অনেক মাদ্রাসায় পঠন-পাঠনও ব্যাপক হারে ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি আশার আলো দেখালেন শুক্রবার। এ দিন শিক্ষকদের এক প্রতিনিধি দলকে তিনি বলেন, সমস্ত আইনি জটিলতা কাটিয়ে দীপাবলির পর রাজ্যের মাদ্রাসায়গুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
ইতিমধ্যে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের অর্থ দফতরের কাছে ছাড়পত্রের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর।
শুক্রবার চাকরিপ্রার্থীদের চারজনের প্রতিনিধির সঙ্গে মহাকরণে বৈঠক করেন রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি।
এ দিন মন্ত্রী বলেন, নিয়োগের জন্য শূন্যপদ তৈরি রয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আগে ছাড়পত্রের জন্য অর্থ দফতরে পাঠাতে হয়। শূন্যপদের তালিকাও পাঠানো হয়েছে। এ দিকে রাজ্যের নিয়োগ প্রক্রিয়া কমিশনের মাধ্যমে চলছে। শিক্ষক বদলিও হয়েছে। তবে একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশ নিয়ে কমিটিগুলিও ঘুরপথে নিয়োগ করছে বলছে অভিযোগ উঠছে। পাশাপাশি কমিটির মাধ্যমে নিযুক্তদের বকেয়া বেতন মেটানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছে।
ইতিমধ্যে রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের কাছে কমিটির মাধ্যমে নিযুক্ত কিছু শিক্ষককে বকেয়া মোটানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে এই নিয়ে কোনও নির্দেশিকা পায়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর।
এই প্রসঙ্গে সংখ্যালঘু দফতরের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, কমিটির মাধ্যমে নিযুক্ত হলেই কী বকেয়া মেটানো সম্ভব হবে। কমিটির মাধ্যমে ভুলপথে নিয়োগ হওয়ার অভিযোগ শোনা গিয়েছে। এইভাবে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিযুক্ত হলে, কীভাবে বকেয়া মেটানো সম্ভব হবে।
মহাকরণে এ দিনের বৈঠকে ছিলেন রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের মুখ্যসচিব ও মাদ্রাসায় সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম আলি আনসারি, সেক্রেটারি সাজ্জাদ সিদ্দিকী, ডিএমই আবিদ হোসেন প্রমুখ।
সূত্রের খবর, রাজ্যে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শূন্যপদ পূরণের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল প্রায় ৯ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালে। মোট ৩ হাজার ১৮৩টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে হয় লিখিত পরীক্ষা। ফল প্রকাশ হতে লেগে গিয়েছিল ২ বছরেরও বেশি সময়।
২০১৬ সালে শেষপর্যন্ত লিখিত পরীক্ষার ফল বের হয়। ২০১৭ সালে ইন্টারভিউয়ের পর ২০১৮ সালে ১৫০০ জনকে নিয়োগ করা হয় বলে জানা যায়। কিন্তু তারপর থেকে ১৭০০ পদ খালি পড়ে রয়েছে।
চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, মাদ্রাসায় সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বঞ্চিত প্রায় ২০০ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগ দিতে হবে। তাঁদের নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধি দল জানিয়েছে, সংখ্যালঘু দফতরের মন্ত্রী ও আধিকারিকদের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রী চাকরিপ্রার্থীদের আশ্বাস দিয়েছেন, আইনি দিক খতিয়ে দেখে তাঁদের নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।