পুবের কলম প্রতিবেদক: আদিবাসীদের সারি এবং সারনা ধর্মকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যপারে দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রতিশ্রুতি মতো সারি ও সারনা ধর্মকে স্বীকৃতি দিতে রাজ্য বিধানসভায় একটি প্রস্তাব আনছে রাজ্য সরকার। বাংলায় বসবাসকারী আদিবাসী সমাজের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নিয়ে দুই ধর্মকে মান্যতা দেওয়ার বিষয়ে ওই প্রস্তাবের উপর আলোচনা হবে বিধানসভার বাজেট অধিবেশেনে।
মঙ্গলবার বিধানসভায় কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে এই প্রস্তাবের কথা জানান পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
তিনি জানান, আদিবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সারি এবং সারনা ধর্মকে মান্যতা দেবে রাজ্য সরকার। আদিবাসীরা প্রকৃতার্থে এই ধর্মাবলম্বী। কিন্তু তাঁদের হিন্দু ধর্মের অন্তর্ভুক্ত করে রাখা হয়েছে। তাই আদিবাসীদের দাবি মেনে স্বীকৃতি দিতে চায় রাজ্য সরকার। শুক্রবার বিধানসভায় এই প্রস্তাবটি আনে শাসক দল।
তবে তৃণমূল পরিষদীয় দলের দাবি, এর সঙ্গে ভোট রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। দেশের প্রান্তিক আদিবাসীদের দাবিকে মান্যতা দেওয়াই মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য। তাছাড়া তিনি কথা দিয়েছিলেন এই দুই ধর্ম যাতে সরকারি স্বীকৃতি পায়, তার জন্য তিনি যা করার তা করবেন। রাজ্য সরকার কোনও ধর্মকে স্বীকৃতি দিতে পারে না। সেটা পারে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু স্বীকৃতির লক্ষ্যে রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব অবশ্যই আনা যায়। কার্যত সেটাই করতে চলেছে রাজ্য সরকার।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে গেরুয়া শিবিরের কাছে বড়সড় ধাক্কা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্কের সিংহভাগ দখলে চলে গিয়েছিল বিজেপির। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে সেই ভোট বেশ কিছুটা নিজেদের দিকে ফেরাতে পেরেছিল তৃণমূল। গত বছর দেশের রাষ্ট্রপতি পদে আদিবাসী জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত দ্রৌপদী মুর্মুকে বসিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার।
তারপর থেকে গেরুয়া শিবির দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আদিবাসী ভোট আগামী লোকসভা নির্বাচনে তাদের ঝুলিতে আনার জন্য তৎপর হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাজেটেও আদিবাসী জনজাতি উন্নয়নের জন্য মোটা টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের এই পদক্ষেপকে মাথায় রেখে রাজ্য সরকারও আদিবাসী সম্প্রদায়ের সারি এবং সারনা ধর্মকে মান্যতা দিতে চলেছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।