পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ কর্নাটকের উদুপি কলেজে হিজাবি ছাত্রীদের ক্লাস করতে না দেওয়া নিয়ে গোটা কর্নাটক জুড়ে একত্রিত হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলছেন মুসলিম ছাত্রীরা। সবচেয়ে আশা ব্যঞ্জক দিক হল মুসলিম ছাত্ররাও এই হিজাবি ছাত্রীদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন। ফলে আন্দোলনের গতিমুখ আরো জোরদার হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে কর্নাটকের উদুপি জেলায় ভান্ডারকর প্রাক-ইউনিভার্সিটি কলেজের গেটে ভিড় করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন হিজাবি ছাত্রীরা। তাদের চিৎকার করতে শোনা যায় “আমরা শিক্ষা চাই!” পুলিশের উপস্থিতিতে আন্দোলন চলতে থাকে ছাত্রীদের। কুন্দুপুরা সরকারি কলেজে শুক্রবারেও বিক্ষোভ দেখান মুসলিম ছাত্রীরা।এই ছাত্রীদের সাফ কথা যদি তাঁদের হিজাব পরে ক্লাস করা নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে যে সমস্ত হিন্দু ছাত্ররা গেরুয়া শাল গায়ে চড়িয়ে কলেজে ক্লাস করতে আসছেন তাদেরও নিষিদ্ধ করা হোক। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি গেরুয়া বসন গায়ে জড়িয়ে আসাও তারা নিষিদ্ধ করেছেন ।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে এই ভাবে প্রচ্ছন্ন ধর্মীয় মেরুকরণ করা হচ্ছে। ভারত একটি ধর্ম নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সেই দেশে কে কি খাবেন , কি পরবেন তা নিয়ে কখনই হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আসলে বিজেপির উগ্র হিন্দুত্ববাদী মানসিকতাকেই এই ক্ষেত্রে সযত্নে লালন পালন করা হচ্ছে।
ছাত্রীরা যখন প্রতিবাদী অবস্থানে অনড় থাকে এবং হিজাব ইস্যুকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ বাড়তে থাকে, তখন কর্ণাটক সংখ্যালঘু কমিশন রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে বলে শিক্ষাবর্ষের শুরুতে কলেজগুলিতে যা ছিল সেই অনুসারে ইস্যুটির বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা হোক যতক্ষণ না আদালতে সমস্যার সমাধান হয়। মুসলিম ছাত্রীরা জানান এই প্রথম যে কলেজ তাদের হিজাব পরার জন্য প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছে তারা আরও বলেন “আমরা অতীতে কখনও হিজাবের বিরোধিতার মুখোমুখি হইনি,” অন্য একটি ছাত্রী, তিনিও নাম প্রকাশ না করে বলেন “হিজাব আমার জীবনের অংশ। এটা নিয়ে কারো কেন সমস্যা হবে।
” হিজাবের বিরোধিতাকারী কলেজগুলির বক্তব্য তারা হিজাবকে পোশাকের অংশ হিসাবে বিবেচনা করে না এবং এটাও মনে করে যে এটি অভিন্নতাকে ব্যহত করে। প্রতিবাদী ছাত্রীরা পাল্টা যুক্তি দেন যে কলেজে হিজাব নিষিদ্ধ করার কোন নির্দেশিকা কস্মিনকালেও জারি করা হয়নি। তাহলে আজ কেন এই বিষয়টিকে এত বড় করে দেখানো হছে। এদিকে কিছু হিন্দুত্ববাদী দল হিজাবের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত হিন্দু শিক্ষার্থীদের সমর্থন যুগিয়ে চলছে। যার ফলশ্রতি হল হিন্দু ছাত্রদের গেরুয়া উত্তরীয় পরে কলেজে আসা।
শিক্ষা হল একটি মৌলিক অধিকার। সেই অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হলে এবং হিজাবি ছাত্রীদের শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশাধিকার না দেওয়া অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।এমনটাই বলছেন শীর্ষ কংগ্রেস নেতা তথা কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সীদ্দারামাইয়া।