পুবের কলম প্রতিবেদক: গতকাল সন্দেশখালিতে যাবার পথে বাধা প্রাপ্ত হওয়ার সময় জনৈক পুলিশ অফিসার পাঞ্জাবি হওয়ার দরুন তাঁকে বদানুবাদের মাঝে ‘খলিস্তানী’ আখ্যা দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিজেপির সদর দপ্তর মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান বড়বাজারের শিখ সম্প্রদায়। এদিনের বিক্ষোভ চলাকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজেপির সদর দপ্তরের দোতলা থেকে নিচে নেমে আসেন রাহুল সিনহা। শুধু তাই নয়, বিক্ষুব্ধদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিক্ষোভ থামানোর চেষ্টা করেও বিফল হন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তাঁদের একটি নির্দিষ্ট জায়গা বেছে দেয় পুলিশ। সেখানেই ধর্না মঞ্চ তৈরি করার প্রস্তুতি নেন শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা।
শিখ নেতারা জানিয়েছেন, সন্দেশখালিতে যাওয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারীকে শান্তিভঙ্গ যাতে না হয়, সেজন্য একজন শিখ অফিসার বাধা দেন। তাতে ওই অফিসারকে অন ডিউটি অবস্থায় খলিস্তানী বলে ডাকা হয়। আমরা এর প্রতিবাদ জানাতে বিজেপির সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের দপ্তরে এসেছি। এই বিক্ষোভ চলতে থাকবে, যতক্ষণ না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ লিখিতভাবে ক্ষমা চাইছেন।
বড়বাজারের শিখ সম্প্রদায়ের সভাপতি গুরমিত সিং জানান, আমরা সমস্ত শিখ সম্প্রদায়কে অনুরোধ করছি, আমরা দেশের জন্য রক্ত দেওয়া সম্প্রদায়, আমাদেরকে খলিস্তানী বলা হয়েছে। এই ডিক্টেটরশিপের বিরুদ্ধে সমস্ত শিখ সম্প্রদায়কে আমরা একত্রিত হয়ে এই ধর্না মঞ্চে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। এটা আমাদের একটা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। এটা চলতে থাকবে। তিনি আরও জানান, আমাদের একটা দল ইতিমধ্যেই এই নিয়ে অভিযোগ জানাতে থানাতে গিয়েছে।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি পুলিশমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপদে বিপদে পুলিশের পাশে দাঁড়াতে পিছুপা হন নি। তাঁর কড়া বার্তা, এই ঘটনায় কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না। জনৈক পুলিশ অফিসার জসপ্রিত সিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে ছিল বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল। এই প্রতিনিধি দলকে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী সন্দেশখালি ঢোকার আগে ধামাখালিতে তাঁকে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। যার জেরে পুলিশের সঙ্গে চরম বিরোধ বাধে বিজেপি দলের প্রতিনিধিদের। বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল সহ একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব পুলিশের সঙ্গে সেই সময় তুলুল বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পুলিশের ব্যারিকেডের মাঝে তখন মাথায় পাগড়ি পড়ে ডিউটি করছিলেন জসপ্রিত সিং। সংবাদ মাধ্যমের সামনেই তাঁকে ‘খালিস্তানি’ বলে কটাক্ষ করে বিজেপি।