পুবের কলম প্রতিবেদক: নির্বিঘ্নে পঞ্চায়েত ভোট করাতে তৎপর রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কীভাবে কাজে লাগানো হবে, তা বিস্তারিত জানিয়ে বিএসএফকে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। তাতে উল্লেখ করা করা হয়েছে কোন কোন জেলায় কত কোম্পানি পাঠানো হচ্ছে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে কোন কোম্পানির ফোর্স কোথায় থাকবে। মুর্শিদাবাদে সবথেকে বেশি ৪৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। এরপরই রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়া। এই দুই জেলাতেই থাকছে ৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এছাড়া, উত্তর ২৪ পরগনায় ৩৫ কোম্পানি, পূর্ব বর্ধমানে ৩৩ কোম্পানি, নদিয়ায় ৩১ কোম্পানি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও মালদায় ৩০ কোম্পানি, কোচবিহার ও হুগলিতে ২৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে। একমাত্র কালিম্পঙে কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে না। সব মিলিয়ে এবারের পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তায় আধা সেনা ছাড়াও থাকছে ২০টি রাজ্যের পুলিশ।
কমিশন সূত্রে খবর, ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে বুধবার পর্যন্ত রাজ্যে হিংসার বলি হয়েছেন পাঁচ জন। পুলিশের তরফে এই রিপোর্ট এসেছে বলে খবর। আহত হয়েছেন ৪৯৬ জন। এখনও পর্যন্ত বোমা উদ্ধার হয়েছে ৮৪১ টি। বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ২২৯ টি। জামিন অযোগ্য ধারায় ১১ হাজার ৪১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলার ৪৮৩৪টি স্পর্শকাতর বুথকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, প্রতিটি বুথেই সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে। বুথের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে মোট ৬৬ হাজার সশস্ত্র পুলিশ কর্মী। এছাড়া মোট ৮ হাজার ৫০০ মোবাইল ইউনিট থাকবে। যারা ভোটের দিন এলাকায় এলাকায় টহলদারি চালাবে। এছাড়া ডিসিআরসি এবং স্ট্রংরুমের নিরাপত্তাতেও থাকবে সশস্ত্র বাহিনী।
কমিশনের নির্দেশ সব বুথেই সিসিটিভি নজরদারি থাকবে। সম্ভব না হলে ভোট প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হবে। সব বুথ চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। কমিশনের তরফে নোডাল অফিসার হিসাবে অতিরিক্ত সচিব এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) বাহিনী মোতায়েন ও পরিচালনার বিষয়টি দেখভাল করবেন। ভোট প্রক্রিয়ার ওপর নজরদারির জন্য ২২ জেলায় ২১ আইএএস আধিকারিককে বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হবে। এছাড়াও ২৩৮ জন ডব্লুবিসিএস আধিকারিককে সাধারণ পর্যবেক্ষক হিসাবে ব্লকস্তরে নজরদারির দায়িত্ব দিয়েছে কমিশন। সাধারণ মানুষের ভোট সংক্রান্ত ভাব অভিযোগ নিষ্পত্তিতে সোমবার থেকেই ব্লক, মহকুমা ও জেলায় কমিশনের কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। রাজ্যের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমের নম্বর ১৮০০৩৪৫৫৫৫৫৩।
আলিপুরদুয়ার- ১০ কোম্পানি বিএসএফ
বাঁকুড়া- ৫ কোম্পানি সিআরপিএফ ও ৬ কোম্পানি বিএসএফ
বীরভূম- ২০ কোম্পানি আইটিবিপি
কুচবিহার- ১০ কোম্পানি সিআরপিএফ ও ১৮ কোম্পানি বিএসএফ, মোট ২৮ কোম্পানি
দক্ষিণ দিনাজপুর- ১০ কোম্পানি বিএসএফ
দার্জিলিং- ২ কোম্পানি চণ্ডীগড় পুলিশ ও ২ কোম্পানি সিআরপিএফ
হুগলি- ৫ কোম্পানি এসএসবি, ১০ কোম্পানি হায়দ্রাবাদ, ২ কোম্পানি গুজরাত, ৬ কোম্পানি গোয়া, ১ কোম্পানি মিজোরাম, ২ কোম্পানি তেলেঙ্গানা ও ২ কোম্পানি মহারাষ্ট্র পুলিশ অর্থাৎ মোট ২৮ কোম্পানি
হাওড়া- ২ কোম্পানি বিএসএফ, ৩০ কোম্পানি আরপিএফ, ৩ কোম্পানি মহারাষ্ট্র ও ২ কোম্পানি গুজরাত পুলিশ অর্থাৎ মোট ৩৭ কোম্পানি
জলপাইগুড়ি- ১০ কোম্পানি বিএসএফ
ঝাড়গ্রাম- ৫ কোম্পানি সিআরপিএফ
মালদহ- ৯ কোম্পানি বিএসএফ ও ২১ কোম্পানি সিআরপিএফ অর্থাৎ মোট ৩০ কোম্পানি
মুর্শিদাবাদ- ৮ কোম্পানি সিআরপিএফ, ৩৫ কোম্পানি সিআইএসএফ ও ২ কোম্পানি গুজরাত পুলিশ অর্থাৎ মোট ৪৫ কোম্পানি।
নদিয়া- ১২ কোম্পানি এসএসবি, ২ কোম্পানি ত্রিপুরা, ৫ কোম্পানি কর্নাটক, ৮ কোম্পানি কেরল, ১ কোম্পানি তেলেঙ্গানা ও ৩ কোম্পানি অরুণাচল পুলিশ অর্থাৎ মোট ৩১ কোম্পানি।
উত্তর ২৪ পরগনা- ১২ কোম্পানি সিআরপিএফ, ৫ কোম্পানি সিআইএসএফ, ১০ কোম্পানি ছত্তীসগড় ও ৮ কোম্পানি তামিলনাড়ু পুলিশ অর্থাৎ মোট ৩৫ কোম্পানি।
পশ্চিম বর্ধমান- ৫ কোম্পানি অসম ও ৫ কোম্পানি এসএসবি অর্থাৎ মোট ১০ কোম্পানি।
পশ্চিম মেদিনীপুর- ৯ কোম্পানি সিআরপিএফ, ৬ কোম্পানি গুজরাত ও ৫ কোম্পানি কর্নাটক পুলিশ অর্থাৎ মোট ২০ কোম্পানি।
পূর্ব বর্ধমান- ২০ কোম্পানি এসএসবি, ১০ কোম্পানি রাজস্থান, ২ কোম্পানি অন্ধ্রপ্রদেশ ও ১ কোম্পানি সিআরপিএফ অর্থাৎ মোট ৩৩ কোম্পানি।
পূর্ব মেদিনীপুর- ২ কোম্পানি ঝাড়খণ্ড, ২৭ কোম্পানি বিহার পুলিশ ও ৮ কোম্পানি নাগাল্যান্ড পুলিশ অর্থাৎ মোট ৩৭ কোম্পানি।
পুরুলিয়া- ২১ কোম্পানি বিএসএফ, ৫ কোম্পানি আইটিবিপি অর্থাৎ মোট ২৬ কোম্পানি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা- ২ কোম্পানি এসএসবি, ১০ কোম্পানি পাঞ্জাব পুলিশ, ১৩ কোম্পানি বিহার পুলিশ ও ৫ কোম্পানি ছত্তীসগড় পুলিশ অর্থাৎ মোট ৩০ কোম্পানি।
উত্তর দিনাজপুর- ১৪ কোম্পানি বিএসএফ, ৬ এসএসবি, ৫ কোম্পানি আইটিবিপি অর্থাৎ মোট ২৫ কোম্পানি।