পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠে একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা সংক্রান্ত মামলা। এই নিয়ে রাজ্য সরকার বার বার সরব হয়েছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। একশ দিনের প্রকল্পের টাকা কেন বন্ধ করা হল? সেই নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছে খেত মজদুর কমিটি।মামলাকারী সংগঠনের দাবি, ‘ অবিলম্বে যাতে প্রকল্পের টাকা চালু করা হয়’। এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ এবার কেন্দ্রের থেকে রিপোর্ট তলব করলেন। বাংলায় কেন একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা হয়েছে, সেই বিষয়ে কেন্দ্রের জবাব চেয়ে পাঠিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত , একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রের থেকে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে রাজ্যের। ‘মনরেগা’ প্রকল্পের বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজ্যে বেশ কিছু বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে, ভুয়ো নাম ব্যবহার করে একশো দিনের কাজের টাকা তোলার যে অভিযোগ উঠে এসেছে, সেই অভিযোগগুলি যথাযথভাবে তদন্ত করে দেখার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
কেন্দ্রের উদ্দেশে হাইকোর্ট জানিয়ে , -‘রাজ্যের অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট কেন্দ্র হয় গ্রহণ করুক, নয়তো বাতিল করুক। কিন্তু কিছু একটা তো করতে হবে।’ হাইকোর্টের নির্দেশ, আগামী ১০ দিনের মধ্যে কেন্দ্রকে ওই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। জুলাই মাসে এই সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে ।প্রসঙ্গত , মঙ্গলবার রাজ্যের আইনজীবী জানান -‘ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে কেন্দ্র একশো দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারপর থেকে রাজ্যের তরফে ৪-৫টি অ্যাকশন টেকেন রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। কেন্দ্রকে একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে লাখ লাখ সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার না হতে হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও কোনও ফল হয়নি’।
অন্যদিকে কেন্দ্রের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এদিন আদালতে জানান, -‘ একশো দিনের কাজের টাকা নয়ছয় করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বানিয়ে, ভুয়ো জব কার্ড বানিয়ে, মিথ্যা টেন্ডার দেখিয়ে ‘মনরেগা’ প্রকল্পের টাকা লুঠ করা হয়েছে ‘।
কেন এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেটাই কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ২০ জুনের মধ্যে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী জুলাই মাসে আবার এই মামলার শুনানি হবে। তবে রাজ্যের কোনও বক্তব্য থাকলে কেন্দ্রের রিপোর্ট দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই তারা জানাতে পারবে বলে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।