নিজস্ব প্রতিবেদক: উৎকর্ষ বাংলায় চাকরির নিয়োগপত্র নিয়ে বিভ্রান্তির কারণে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। জাল চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরকার বিরোধী প্রচার তুঙ্গে। শেষ পর্যন্ত ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নড়েচড়ে বসল রাজ্য প্রশাসন।
চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার দায়িত্বে থাকা গুরগাঁওয়ের একটি সংস্থার বিরুদ্ধে এফআই আর দায়ের করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য নিয়োগপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হবে সোমবার নবান্নে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে ১১ হাজার কর্মপ্রার্থীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই নিয়োগপত্র নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। অভিযোগ ওঠে ভুয়ো সংস্থার নামে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে আসরে নামে বিরোধীরা। এমনকী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিজেপি ও বামপন্থী নেটা নাগরিককরা ‘জাল’ নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে শোরগোল বাঁধান। ফলে কিছুটা হলেও অস্বস্তি পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে।
এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে ওই তথাকথিত জাল নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেন রাজ্যের মুক্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তাঁর কথায়, ‘যারা উৎকর্ষ বাংলার উদ্যোগে পলিটেকনিক আইটিআই থেকে প্রশিক্ষণ পেয়েছে তাঁদের জন্য হাজার হাজার চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে চাকরি মেলার মধ্যে দিয়ে।
সিআইআইকে সঙ্গে নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে। সিআইআইয়ের পক্ষ থেকে গুরগাঁওয়ের একটি সংস্থাকে এগ্রিগেটর হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই সংস্থার কারণে ১০৭ জনের চাকরি নিয়ে সমস্যা হয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ওই সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।’ ১০৭ জনের নিয়োগ নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে ভুল প্রচার চলছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘এত বড় কর্মযজ্ঞে হাজার হাজার মানুষ কাজ পাচ্ছে। সেখানে একটা ভুল হতেই পারে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়োগ নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায় রাজ্য সরকারের কাঁধে চাপিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা চলছে। এই নিয়ে অনেকে মিথ্যে প্রচার চালাচ্ছে যে রাজ্য সরকার নাকি ভুয়ো চাকরি দিয়েছে। এই তথ্য একেবারে ভুল।’
নিয়োগ বিভ্রান্তির শিকার হওয়া ১০৭ জনকে বিকল্প চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মুখ্যসচিব বলেন, ‘ওই ১০৭ জনের ভবিষ্যত কোনও ভাবেই যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। ১০৭ জনকে দুই থেকে তিনটি অন্য সংস্থায় চাকরির অফার দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য সতর্ক থাকা হবে। এবার থেকে সিআইআই যে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা বানাবে, তা ক্রস চেক করে তবেই চাকরির মেলায় নিয়োগ পত্র তুলে দেওয়া হবে।’ একই সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীরা কোনও সমস্যায় পড়লে যাতে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সেই আর্জিও জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।