পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ ইউক্রেনে হামলা চালাতে প্রস্তুত রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষে রুশ হামলা ঠেকানো প্রায় অসম্ভব। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমেও এই সংকটের সমাধান হচ্ছে না। এরকম পরিস্থিতিতে পশ্চিমা সেনা জোট ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের চেষ্টা থেকে আপাতত বিরত থাকার ঘোষণা করতে পারে ইউক্রেন। এমনই পূর্বাভাস দিয়েছেন ব্রিটেনে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ভাদিম প্রাইস্তাইকো। ২০০৮ সাল থেকে ন্যাটোতে যোগদানের চেষ্টা করছে ইউক্রেন। কিন্তু রাশিয়ার আপত্তির কারণে ন্যাটোতে যোগ দিতে পারছে না তারা। রাশিয়ার অভিযোগ– ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগদান করলে ওই অঞ্চলে ন্যাটোর আধিপত্য বৃদ্ধি পাবে। যা তাদের আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি। গত এক মাস ধরে এ ইস্যুকে কেন্দ্র করেই উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি– ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়া সেনা মোতায়েন করেছে। প্রতিবেশী বেলারুশের সঙ্গে দশ দিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া। ফলে– সামগ্রিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিশ্লেষকদের মতে– রাশিয়া হামলা চালালে চার দিনের বেশি প্রতিরোধ করতে পারবে না ইউক্রেন। আর আমেরিকা যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণের প্রতিশ্রতি ব্যক্ত না করায় ইউক্রেন আপোষের চেষ্টা করছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে জরুরি আলোচনার ঘোষণা করেছে কিয়েভ। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী কুলেবা জানিয়েছেন– রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার সময় মিত্র সদস্য দেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। যদি রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়– তাহলে তার প্রভাব পুরো ইউরোপ মহাদেশে ছড়িয়ে যাবে। ফলে– অর্থনৈতিক বিপর্যয়– শরণার্থী সংকটসহ বড় ধরনের সংকটের মুখোমুখি হবে ইউরোপ।
ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে ইউক্রেন তার অবস্থান পরিবর্তন করবে কি না– এমন প্রশ্ন করা হয় ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ভাদিম প্রাইস্তাইকোকে। জবাবে তিনি বলেন– ‘সম্ভবত এটা বলে আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে এবং এই অবস্থান থেকে সরে আসতে চাপ দেওয়া হচ্ছে।’ এদিকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এমন অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়ার পর এ নিয়ে মন্তব্য করেন রুশ সরকারের প্রতিনিধি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্র পেসকভ বলেন– ইউক্রেন যদি ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসে– তবে সেটি হবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ। এদিকে সংকট সমাধানে ইউক্রেন সফর করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ। দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এই বৈঠকের পর জেলেনস্কি বলেন– রশিয়া জার্মানি পর্যন্ত যে গ্যাসলাইন স্থাপন করেছে– সেই নর্ড স্ট্রিম২কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে মস্কো। এর আগে পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের– ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর বৈঠক থেকেও সমাধান বেরিয়ে আসেনি। উল্লেখ্য– ২০০৮ সালে ন্যাটো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল– একসময় ন্যাটোর সদস্য হতে পারবে ইউক্রেন। এ প্রতিশ্রুতিরই প্রত্যাহার চায় রাশিয়া। কারণ– ইউক্রেন যদি ন্যাটোয় যোগ দেয়– তবে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী রুশ সীমান্তে চলে আসবে। এ প্রসঙ্গে পুতিন বলেছিলেন– ইউক্রেন এমন পদক্ষেপ নিলে তা পরিস্থিতিকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে।