পুবের কলম প্রতিবেদক: রবিবার ব্রিগেড থেকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ৪২ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন তৃণমূল সুপ্রীমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪২ আসনের প্রার্থী তালিকায় বিশেষ চমক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। ৪২ প্রার্থীর মধ্যে এ বছরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৬ সংখ্যালঘুকে ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সুযোগ করে দিয়েছেন। এবছর মুখ্যমন্ত্রী মালদা দক্ষীণ কেন্দ্রে প্রার্থী করেছেন শাহনওয়াজ আলি রাইহান নামে এক তরুণ মুখকে। শাহনওয়াজ বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণারত। উচ্চশিক্ষিত, ভদ্র, বিনয়ী। এই যুবক পুবের কলম পত্রিকায় ১ বছরের বেশি সময় সাংবাদিকতার কাজে নিযুক্ত ছিলেন। প্রাক্তন সাংসদ তথা পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান এই তরুণ প্রতিভাকে বৃহত্তর ক্ষেত্রে বিকশিত করার লক্ষ্যে নিরন্তর উৎসাহ যুগিয়েছেন। পরিযায়ী শ্রমিক এবং দিন মজুরের জেলা মালদার সার্বিক উন্নয়নে এই তরুণ আগামীদিনে আলোক দিশা হিসেবে কাজ করবেন বলেন মনে করছে তৃণমূল সুপ্রীমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই জন্য মালদার গুরুত্বপূর্ণ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার টিকিট দেওয়া হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রটি দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনে বিরাট চমক দিয়েছেন দলনেত্রী। এই আসনে ক্রিকেটার ইরফান পাঠানকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার সুযোগ দিয়ে বিরাট চমক এনেছেন প্রার্থী তালিকায়। ইরফান পাঠান ইতিমধ্যে এক্স হেন্ডেলে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন। তৃণমূল সুপ্রীমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে আগামীদিনে বহরমপুর বাসীর জন্য কী করতে চান সে বার্তাও দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞ। বহরমপুরের মতো একটি উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করার জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাঁর পরিবারের কাছে সময় সময় রয়েছেন। তার জন্য সুকরিয়া আদায় করেন। বাংলার মানুষের জন্য তিনি কি করতে চান সে বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
মুর্শিদাবাদ লোকসভা আসনে ফের প্রার্থী করা হয়েছে গত বারের বিজয়ী সাংসদ আবু তাহের খানকেই। দল তাঁর প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখেছে। আবু তাহের খান বছর দেড়েক আগে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে মমতা বন্দপাধ্যায় সেই আবু তাহের খানের উপর আস্থা রাখলেন।
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জঙ্গীপুর লোকসভা কেন্দ্রে আবার টিকিট পেলেন গত বারের বিজয়ী সাংসদ বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং রাজ্য হজ কমিটির চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান। গত কয়েক বছর ধরে জঙ্গীপুর লোকসভা কেন্দ্রের সার্বিক উন্নয়নে খলিলুর রহমান কাজ করে চলেছেন। তৃণমূল নেত্রী ফের খলিলুর রহমানের উপরই আস্থা রাখলেন। পুবের কলমকে তিনি বলেন, মানুষের জন্য কাজ করবেন। বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের দিকে জোর দেবেন।
উত্তর ২৪ পরগনার সব থেকে আলোচিত লোকসভা কেন্দ্রে বসিরহাট। এই কেন্দ্র থেকে ২০০৯ সালে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন হাজি নুরুল ইসলাম। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস সেই হাজি নুরুলের উপরই ভরসা রাখলেন। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছিল অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে। অভিনেত্রীর কাজকর্মে মোটেই সন্তুষ্ট ছিল না দল। সন্দেশখালি ইস্যুতেও নুসরতের উপর সন্তুষ্ট ছিলনা দল। তার বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য বসিরহাটের মানুষের কাছ থেকে নানা কু-কথাও শুনতে হয়েছে। হাজি নুরুল ইসলাম এক জন যোগ্যনেতা বসিরহাট এলাকার উন্নয়নে তাঁর অন্যতম ভূমিকা রয়েছে। ভূমিপুত্রকেই টিকিট দিয়েই বাড়তি সুবিধে আদায় করে নিয়েছে তৃণমূল।
হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া কেন্দ্র থেকে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন মরহুম সুলতান আহমেদ। ২০১৭ সালে হঠাৎ তাঁর ইন্তেকাল হলে সেই আসন থেকে জয়ী হন তাঁর সহধর্মিনী সাজদা আহমেদ। উপনির্বাচন এবং ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন সাজদা আহমেদ। সেই সাজদা আহমেদের উপর ভরসা রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে উলুবেড়িয়া আসন থেকে ফের তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন সাজদা আহমেদ। এবছর লোকসভা নির্বাচনে ছয় তৃণমূল প্রার্থী বেশ উল্লেখযোগ্য মনে করা হচ্ছে ৬টি আসনই জয়লাভ করবে তৃণমূল প্রার্থীরা।