পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ সারা বিশ্বে কোভিড অতিমারি হানা দেওয়ার পর থেকে ফেস মাস্ক আমাদের জন্য এক অত্যাবশ্যকীয় বস্তুতে পরিণত হয়েছে। সরকার প্রশাসন থেকে মানুষকে নিত্যদিন সাবধান করা হচ্ছে মাস্কের ব্যবহার সম্পর্কে। করোনা ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাস্ক পরা বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়। কিন্তু এই মাস্কই যদি পরিবেশের দুর্দশা ডেকে আনে তাহলে?
গত বছরের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী সমুদ্রে গিয়ে মিশেছে দেড়শো কোটি ব্যবহৃত মাস্ক। যার ফলে সমুদ্রের জল নিত্যদিন দূষিত হচ্ছে, পরিবেশের স্বাভাবিক বাস্তুতন্ত্র হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ। ফেলে দেওয়া মাস্ক থেকে হওয়া পরিবেশের এই ক্ষতির থেকে মুক্তির উপায় বের করে ফেলেছেন এক ভারতীয় পরিবেশকর্মী। বানিয়েছেন এমন একটি জৈব মাস্ক যা ফেলে দেওয়ার পর তার থেকে জন্মাবে গাছ।
কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালুরুর পরিবেশকর্মী নীতিন ভাস দীর্ঘদিন থেকেই পরিবেশের রক্ষার্থে নানাবিধ উপযোগী উদ্ভাবনা করে যাচ্ছেন। এই জৈব মাস্ক সেই উদ্ভাবনায় এক নতুন সংযোজন।
করোনার এই ভয়াবহ পরিবেশে মানুষকে উদ্ভিদ সচেতন রাখতে এবং মাস্ক দূষণ রোধ করতেই তার এই পরিকল্পনা। জৈব মাস্ক হলেও কার্যকারিতা নিরিখে কোনও অংশেই ডিস্পোসেবল মাস্ক-এর চেয়ে কম নয় এই মাস্ক। কাপড়ের সঙ্গে বিভিন্ন বীজের মিশ্রণ এর দ্বারা তৈরি হয় এই জৈব মাস্ক। এই কাপড় আসে কর্নাটকের বিভিন্ন টেলরিং শপ থেকে যার ফলে কাপড়ের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারও কমছে।
এই বিষয়ে উদ্ভাবক নীতিন বলেন, “আমরা প্রান্তিক গ্রাম্য মহিলা ও যুবক যুবতীদের সঠিক ট্রেনিং ও কাঁচামাল ব্যবহার শিখিয়ে তাদের এই কাজে সংযুক্ত করি যার ফলে তারাও কর্মসংস্থান পায়”।
তিনি এও বলেন, যে প্রথমে এই মাস্কগুলি বিনামূল্যে বিতরণ করা হলেও বর্তমানে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য তারা মাস্কগুলি ২৫ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছেন। তার সংস্থা পেপার সিড কোম্পানি থেকে পাওয়া যায় মাস্কগুলি। তবে তিনি জানান, ভারতের থেকে বেশি অর্ডার তিনি বিদেশ থেকে পাচ্ছেন। তার তৈরি এই জৈব মাস্কের বাণিজ্যিক প্রস্তুতির প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে বহুজাতিক কিছু সংস্থা। করোনা থেকে হয়তো একদিন বিশ্ব করোনামুক্ত হবে সেই মুক্ত বিশ্বকে দূষণ মুক্ত রাখার জন্য তরুণ উদ্ভাবকের এই প্রযুক্তিকেই ভরসা করছেন বহু মানুষ।