বিশেষ প্রতিবেদন: ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেবে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এই নয়া আবিষ্কার বিশেষ প্রতিবেদন: চলতি বছরে প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়া। প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়। সম্প্রতি বেশ কয়েকবার কেঁপে উঠেছে নেপাল সহ উত্তর পূর্ব রাজ্য। দিল্লি, কলকাতা সহ দার্জিলিং, কালিম্পং রাজ্যে ভূমিকম্প হয়। ফলে বার বার ভূমিকম্পে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে এবার ভূমিকম্পের আগাম আভাস দিতে পারবেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। এমনটাই দাবি করেছেন তারা। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ জিওম্যাগনেটিজমের বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার নয়া দিগন্ত উন্মোচন করবে। ৮ মাত্রার নীচে মাঝারি মানের ভূমিকম্প হলেও কম্পনের কেন্দ্রস্থলের কাছে একটি একক বিন্দু থেকে পরিবর্তে সেটি চারদিকে সংকেত পাঠাবে। এই সংকেত ভূমিকম্প হওয়ার আগে পূর্বাভাস দিতে সাহায্য করবে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তুরস্কে ৭.৮ এবং ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়।
গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমস ট্র্যাকিং নেটওয়ার্কগুলির থেকে বিজ্ঞানীরা সিআইপি, বা কোসিসমিক আয়নোস্ফিয়ারিক পারটার্বেশনস মডেল ধরে বিশ্লেষণ করেন। সিপিসি(কখনও এতে সমুদ্রতলের অনেক স্থান উপরে ভেসে ওঠে। কখনও স্থলভাগের অনেক স্থান সমুদ্রতলে ডুবে যায়। অনেক সময় নদীর গতি পরিবর্তিত বা বন্ধ হয়ে যায়। ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে পাহাড় থেকে বড় বড় বরফখণ্ড হঠাৎ নিচে পতিত হয় এবং পর্বতের পাদদেশে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।) আয়নোস্ফিয়ার বলতে পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০-১০০ কিলোমিটার উপরে বায়ুমণ্ডলের একটি স্তর বোঝায়, যেখানে আয়ন এবং ইলেকট্রন সৌর বিকিরণ দ্বারা তৈরি হয়। স্যাটেলাইট যোগাযোগের মাধ্যমে কোসিসমিক বলতে সিসমিক কার্যকলাপের সময় এবং পরে সময়সীমা বোঝায়। ভূমিকম্পের সময় আকস্মিক ভূত্বক স্থানচ্যুতি হয়ে উৎপন্ন শব্দ তরঙ্গগুলি আয়নোস্ফিয়ারে উপরের দিকে যায়, ইলেক্ট্রন ঘনত্বের ওঠানামা তৈরি করে যা জিএনএসএস উপগ্রহ-রিসিভার রেঞ্জে সংকেত পৌঁছায়।
বিজ্ঞানীদের দাবি, বায়ুমণ্ডলের একটা স্তর ‘আয়নোস্ফিয়ার’-এ তড়িৎ-কণা বা আধানের তারতম্য বিচার করে বড় ভূমিকম্প কোথায়, কত দিনের মধ্যে হতে যাচ্ছে, তার পূর্বাভাস দেওয়া যাচ্ছে। ভূকম্পের কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন আগে পৃথিবীর ওপরে বায়ুমণ্ডলের প্রায় শেষ স্তর- আয়নোস্ফিয়ারের সবচেয়ে নীচের স্তরে (ভূপৃষ্ঠের ৬০ থেকে ৯০ কিলোমিটার ওপরে) রেডিও সিগন্যালগুলোর মধ্যে একটা অদ্ভূত রকমের ‘পাগলাটে আচরণ’ বা বিশৃঙ্খলা দেখতে পাওয়া যায়। বেড়ে যায় বিদ্যুৎ-চমকের ঘটনাও। গবেষকরা ভূমিকম্পের পূর্বাভাস অ্যাপ্লিকেশনের জন্য চিত্র উপ-পৃষ্ঠ পরিবর্তনের জন্য জিএনএসএস এবং রাডার স্যাটেলাইটগুলিকে একত্রিত করে ইন্টারফেরিওমেট্রিক পদ্ধতির প্রয়োগ করার লক্ষ্যও রেখেছেন।