পুবের কলম প্রতিবেদক: বাম আমলেই রাজ্যের দেনা ছিল। তাই নানান উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়তে হচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকারকে। তবে সরকার চাইছে না যে, কোনও মেধাবী পড়ুয়ার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাক। তাই রাজ্য সরকার স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট-কাম-মিনস স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। রাজ্যের ভাঁড়ারে টানাটানি থাকলেও অভাবী-মেধাবীদের পাশে দাঁড়াতে মমতার সরকার যে দরাজহস্ত, তার প্রমাণ মিলল ফের। জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ৮ লক্ষ পড়ুয়াকে এই স্কলারশিপ বা বৃত্তি দিতে সরকারের খরচ হচ্ছে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা।
জানা গিয়েছে, এই স্কলারশিপ খাতে গত আর্থিক বছরের উদ্বৃত্ত ছিল প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। সেইসঙ্গে চলতি বছরের ১১০০ কোটি টাকা যুক্ত করে মোট ১৪০০ কোটি টাকা খরচ করবে রাজ্য। গতবারের তুলনায় এবার স্কলারশিপের জন্য রাজ্যের খরচ অনেকটা বাড়ছে। সূত্রের খবর, ৩১ মার্চের মধ্যে প্রত্যেক যোগ্য আবেদনকারীর অ্যাকাউন্টে বৃত্তির টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য। ইতিমধ্যে বেশিরভাগ পড়ুয়ার অ্যকাউন্টে টাকা ঢুকে গিয়েছে। বাকিদের টাকা খুব তাড়াতাড়ি অ্যাকাউন্টে ঢুকবে। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উপভোক্তা পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই ছ’লক্ষের বেশি পড়ুয়া টাকা পেয়েছেন, বাকিদের দ্রুত টাকা দেওয়া হবে।
জানা গিয়েছে, নতুন আবেদনকারীর পাশাপাশি আগে এই বৃত্তি পেয়েছেন, তেমন পড়ুয়ারা আবেদন করলেও বৃত্তি দেওয়া হয়। এবার আবেদনের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার পর দেখা যায়, সব মিলিয়ে প্রায় ৯ লক্ষ ফর্ম জমা পড়েছে স্কলারশিপ পোর্টালে। সেগুলি পরীক্ষার পর নায্য স্কলারশিপ প্রাপকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট লক্ষের সামান্য বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, সাধারণ ডিগ্রি কলেজে পড়াশোনা করছেন এমন প্রায় তিন লক্ষ পড়ুয়া বৃত্তির জন্য আবেদন করেছেন। এছাড়া পলিটেকনিক, মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বহু ছাত্রছাত্রীর পাশাপাশি ৮৪ হাজার উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়াও ফর্ম জমা করেছে বলে খবর।
প্রসঙ্গত, বহু বছর ধরেই এমন মেধাবী-অভাবীদের স্কলারশিপ দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। আগে নিয়ম ছিল- আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ও মেধাবীদের এই স্কলারশিপে আবেদন করতে গেলে শেষতম পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশ নম্বর বাধ্যতামূলক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সেই নম্বর কমিয়ে দিয়েছেন যাতে কেউ বঞ্চিত না হয়। তাই বছর দু’য়েক আগে যোগ্যতামান কমিয়ে ৬০ শতাংশ করা হয়। আগে ৩ থেকে ৫ লক্ষ আবেদন জমা পড়ত, এখন তা ন’লক্ষ ছুঁইছুঁই।