পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ফিলিস্তিনের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের বাইরে ফিলিস্তিনিদের ধরে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে ইহুদি সেনারা। অভিযোগ, ফিলিস্তিনি চোখ বেঁধে ও তাদের নগ্ন করে প্রহার করেছে যায়নবাদীরা। আর এর ভিডিয়ো তুলে তারা প্রকাশও করেছে। ভিডিয়ো দেখা যায়, আটক ফিলিস্তিনিদের পরনে ছিল কেবল আন্ডারওয়্যার। পরে তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় ইসরাইলি সেনা। ঠিক কখন ও কোথায় ঘটনাটি ঘটে, তা জানা যায়নি। তবে এ ঘটনার ভিডিয়ো দেখে এটিকে গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের বাইরের কোনও এক স্থান বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউরো-মেডিটেরানিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে জানায়, ‘ইসরাইলি সেনাবাহিনী কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি অসামরিক লোককে আটক করে তাদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালাচ্ছে।’
সূত্রের খবর, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ফিলিস্তিনের চিকিৎসক, শিক্ষক, সাংবাদিক ও প্রবীণ শরণার্থীরা রয়েছেন। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আল-আরাবি আল-জাদিদ জানায়, তাদের এক সাংবাদিক এবং তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য আটক এসব ব্যক্তির মধ্যে ছিল।
সংবাদ সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলি দখলদার বাহিনী এক সাংবাদিককে আটক করে। আমাদের সহকর্মী দিয়া আল-কাহলতকে বেইল তাহিয়ার মার্কেট স্ট্রিট থেকে আটক করা হয়। তার সঙ্গে তার কয়েকজন ভাই, স্বজন এবং অন্যান্য অসামরিক লোককে গ্রেফতার করা হয়। এরপর দখলদাররা ইচ্ছাকৃতভাবে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের নগ্ন করে তাদের অপমান করে ও নির্যাতন চালায়। ভিডিয়োয় দেখা যায়, কয়েকশ’ পুরুষকে পোশাক ছাড়া বসিয়ে রাখা হয়েছে সড়কে। হাঁটু গেঁড়ে, হাত ওপরে তুলে সারিবদ্ধভাবে বসে আছেন তারা। রাইফেল হাতে তাদেরকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে ইহুদি বাহিনী। পরে তাদেরকে গাদাগাদি করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রাকে।
তেল আবিবের দাবি, ইসরাইলি সেনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে এসব হামাস যোদ্ধা। তবে ফিলিস্তিনি সূত্র জানায়, আটকরা সবাই অসামরিক। হামাসের সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। যদিও ইসরাইল দাবি করেছে, এসব সাধারণ ফিলিস্তিনি তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। আর তারা সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সন্দেহভাজন সদস্য। তবে ভিডিয়োতে ইসরাইলি সেনার হাতে বন্দিদের সাধারণ মানুষ বলেই চিহ্নিত করেছেন গাজার স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরাFলি সেনারা। এছাড়া ২৮ অক্টোবর থেকে স্থল অভিযানও শুরু করে তারা। গাজায় দখলদার সেনারা এখনও পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধসহ সব ধরনের মানবতা বিরোধী কাজ করেছে। নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। ইসরাইলিদের হামলায় পুরো গাজা এখন মৃত্যুপুরিতে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধের শুরুতে গাজার উত্তরাঞ্চলে হামলা চালায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এখন তারা ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে। বিশেষ করে খান ইউনুসকে লক্ষ্য করেছে তারা। বর্তমানে খান ইউনুস এলাকায় হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরাইলি বাহিনীর প্রবল সংঘর্ষ চলছে।