পুবের কলম প্রতিবেদক, মেদিনীপুর: বাবাকে হারিয়েছে শৈশবেই। পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে ছিলেন তিনি। মায়ের ছত্রছায়াতেই দুই ভাই-বোনের বড় হওয়া ওঠা। বাবার মৃত্যুর পর মা জেলা পুলিশ অফিসে ক্লার্কের চাকরি শুরু করেন। মায়ের কঠিন লড়াই ও নিজের অধ্যবসায়ের জেরে উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে যুগ্ম অষ্টম স্থান অধিকার করল শাকলাইন।
শাকলাইন-এর চেষ্টায় উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে যুগ্ম অষ্টম। ৫০০ নম্বরের মধ্যে সে পেয়েছে ৪৮৯। সৈয়দ শাকলাইন কবীর পশ্চিম মেদিনীপুরের হবিবপুর এলাকার বাসিন্দা।
স্বামী মারা যাওয়ার পর শাকলাইনের মা চাঁদ ফিরোজা একাকী লড়াই চালিয়ে গেছেন এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে। মেয়ে বর্তমানে কলেজে পড়ুয়া। ছোট থেকেই মেধাবী ছিল শাকলাইন। তার ছেলের উন্নতির স্বার্থে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন মা। করোনা পর্বের সময় মাধ্যমিক দিতে পারেনি সে।
মা চাঁদ ফিরোজা বলেন, মাধ্যমিক দিতে পারেনি বলে একটা দুঃখ ছিল। অনেক প্রার্থনা করতাম ছেলের যেন ভালো ফলাফল হয়। আল্লাহ অবশেষে আমার প্রার্থনা কবুল করেছেন। মনের আশা পূরণ হয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলাতেও শাকলাইন ভালো। নরেন্দ্রপুরের থাকাকালীন খেলাধুলো যথেষ্ট করেছে সে।
এদিন শাকলাইন বলেন-“ফলাফল ভালো করার লক্ষ্যে ছিল। তবে নরেন্দ্রপুরে থাকাকালীন চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি পড়তে পারতাম না। আলাদা করে টিউশনের কোনও বিষয় ছিল না সেখানে। টেস্ট পরীক্ষার পর বাড়িতে এসে বিজ্ঞান বিভাগে কয়েকটা টিউশন নিয়েছিলাম। সাত থেকে আট ঘণ্টা বাড়িতে পড়াশোনা করতাম। ফলাফল ভালো হবে জানতাম, এতোখানি ভালো হবে সেটা জানতাম না। ভবিষ্যতে লক্ষ্য রয়েছে চিকিৎসক হওয়ার।”