দেবশ্রী মজুমদার, লাভপুর: লাভপুরে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে প্রচারে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি নিয়ে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে বলে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি একাধারে বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন। হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত হিন্দি কমিডির ‘ঝুট বোলে কাউয়া কাটে, কালে কাউয়ে সে ডারিও’ শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়।
তিনি এদিন অল আউট বিজেপিকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করছি। এই বিজ্ঞাপন বেআইনি। নির্বাচন কমিশন এই ধরনের বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিতে পারে না। আমরা করলে অনুমতি দিত না। কোথাও প্রকাশকের নাম নেই। শুধু নিচে বিজেপি লেখা আছে। যে যে সংবাদ পত্র টাকার জন্য এসব প্রকাশ করছে তাদেরকে নোটিশ পাঠাবো। বিজ্ঞাপনে বলছে, তৃণমূল কংগ্রেস দুর্নীতির আঁতুর ঘর। আমি বলছি তোরা ডাকাত। নরেন্দ্র মোদিদের বলব, পিসি-ভাইপো বলবেন না। ক্ষমতা থাকলে আর যদি হিম্মত থাকে পিসি-ভাইপো না বলে, আমার আর অভিষেকের নাম দিয়ে বিজ্ঞাপন করো। দেখব কত বড়ো বুকের পাটা! কোন পিসি? কোন ভাইপো? খায় না, মাথায় দেয়? লজ্জা করে না। বিজেপি এই বিজ্ঞাপনে নেমে এসেছে? মিটিংয়ে লোক হয় না, তাই কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন। তিন বছর ধরে একশো দিনের টাকা দেন নি। এখন কোথায় বিজ্ঞাপনে টাকা পাচ্ছেন? তেতাল্লিশ হাজার বাড়ি আমরা দিয়েছি। বেশির ভাগ টাকা আমাদের। এতো ঝুটা সরকার দেখি নি। নির্বাচন কমিশনের কোলে বিজেপি। এদের চোখ আছে দেখে না। কান আছে শোনে না। মনে রাখবেন মোদিবাবু, সারা ভারতে সততার দল তৃণমূল। তাই হিংসায় জ্বলেন, আর লুচির মতো ফোলেন। এই জেলার অনুব্রতকে জেলে রেখেছেন। একদিন বের হবে। কেজরিওয়ালকে ভরেছেন। দেশের একমাত্র আদিবাসী মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে জেলে ভরেছেন। গোটা দেশটাকে জেলখানা বানিয়েছেন। আপনার আম্বানি, আদানিকে জিজ্ঞেস করবেন আমার দলকে কত টাকা দিয়েছে? সৎ সাহস থাকলে মঞ্চে এসে বলে যাবেন। বিজ্ঞাপন দেবেন না। যে গদ্দার দোসরদের নিয়ে চলছেন, দেখেছেন তাদের প্রপার্টি কী করে এই ক’বছরে এত বেড়ে গেল? মনে রাখবেন, কয়লা আমাদের সাবজেক্ট নয়। সিএসএফ দ্যাখে। আপনাদের নিয়ন্ত্রণে। গরু পাচার আমাদের সাবজেক্ট নয়। আপনাদের বিএসএফ দেখে। আপনাদের মন্ত্রী কয়লা পাচার করে, গরু পাচার করে। আমি সাংসদ হিসেবে দেড় লাখ পেনশন নিতে পারতাম। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেড় লাখ মাইনা নিতে পারতাম। নিই না। বই লিখে আমার চলে। এরকম মিথ্যা বললে, লোকে জিভ টেনে ছিঁড়ে ফেলবে। ঈশ্বর জিভ খুলে নেবে। আমি যদি জিজ্ঞেস করি? পিএম কেয়ারের টাকার হিসেব দাও? কোভিডের টাকার হিসেব দাও? ফরেন ডিল, ডিফেন্স ডিলের হিসেব দাও? দেশটার নাম বলছি না। একটা দেশের কাছে বিক্রি হয়ে গেছ। দেশের কাশিপুর গান ফ্যাক্টরিতে আর অর্ডার হয় না। কালো টাকা কোথায় গেল? জনগণের টাকায় প্নেন কিনেছেন। সিবিআই, ইডি হাতে। জুডিশিয়ারি কিছুটা হাতের মুঠোয়। তিনশোর বেশি টিম পাঠিয়েও কিচ্ছু পাওনি। তবুও বলছ, আমরা টাকার হিসেব দিই নি, তাই টাকা আটকেছো। সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। বিজেপিও কাজ করতে দেয় না। সারাক্ষণ পিছনে লেগে থাকে। এতো মিথ্যাচার, ব্যাভিচার কোরো না। তারপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সন্দেশখালি কেমনভাবে সাজিয়েছো? টাকা দিয়ে। টাকা দিয়ে বাংলার মায়ের আত্মসম্মান, সম্মান বিক্রি কোরো না। একটা পঞ্চায়েত এলাকায় ছোট্ট ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচার করেছো। সন্দেশখালির কালি ঢাকতে তৃণমূলের ঘরে কালি? মোদীবাবু এসে চোখের জলে ভাসিয়েছ। তারজন্য গোটো রাজ্যবাসী দায়ি হয়ে যায় না। আপনারা দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছেন। আপনারা দেশ বেচার সরকার। ধর্ম বেচার সরকার। বিলকিস বানোদের প্রতি অত্যাচারের সরকার।