পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ নাজিম-এ-ইসলামি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশ্ব বিখ্যাত ইসলামিক চিন্তাবিদ ডঃ ইসরার আহমেদের ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করে দিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৩০ লাখ সাবস্ক্রাইবার বা গ্রাহক ছিল ইউটিউব চ্যানেলটির। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ও ট্যুইটারে ব্যাপক বিরোধিতা দেখা যায়। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ডঃ ইসরার আহমেদের অসংখ্য গুনগ্রাহী বা অনুগামিরা তাঁর ইউটিউব চ্যানেলটিকে পুনরায় বহাল রাখার জন্য আর্জি জানান। আহমদের চ্যানেল ফিরিয়ে দাও এবং ইসালাম বিদ্বেষ এই দুটিকে ইংরাজি হ্যাশটাগ ব্যবহারের মাধ্যমে বহু মানুষ ট্যুইটারে বিষয়টিকে ট্রেন্ড করতে শুরু করে। জব্বাদ খান নামক এক ট্যুইটার ব্যবহারকারী লেখেন রমযানে সবাই উনার বক্তব্য শুনতে চান– তাঁর চ্যানেলকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। ইঞ্জিনিয়ার হারুন নাজির বলেন– এটা খুবি লজ্জাজনক বিষয়। এটাই হলো ইসলাম বিদ্বেষের আসল চেহারা।
ইহুদি সম্প্রদায়ের সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘দ্য জিউস ক্রনিকল’ তাদের এক প্রতিবেদন দাবি করে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের কারণেই ডঃ ইসরার আহমেদের ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ করা হয়েছে। ইহুদি পত্রিকাটি আরো দাবি করে– আমেরিকার টেক্সাস সিনেগগ(ইহুদিদের উপাসনা গৃহ) কে জিম্মি করে রাখার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মালিক ফায়সাল আক্রম নাকি ডঃ ইসরার আহমেদের বক্তব্য শুনতো।
নাজিম-এ-ইসলামি সংগঠনের সভাপতি সুজাউদ্দিন শেখ বলেন– ডঃ ইসরার আহমেদের ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা ইসলাম বিদ্বেষের চরম নিদর্শন। চ্যানেলটির লাখ-লাখ সাবস্ক্রাইবার– বিশ্বের কোটি -কোটি মানুষ এই চ্যানেলটি দেখেন। আর এ কারণেই ইসলামের যারা শত্রু তাদের চক্ষুশূল হয়ে পড়ে চ্যানেলটি।ডঃ ইসরার আহমেদের ইউটিউব চ্যানেলের অপর এক সহকর্মী আসিফ হামিদ সংবাদ মাধ্যমকে জানান– বিষয়টা এমন যে কেউ যদি পাবজি গেম খেলে এবং তারপর তার পরিবারের কাউকে খুন করে তাহলে সেই খুনের দায় পাবজি গেম নির্মাতাদের উপর দেওয়া হবে। কিংবা কেউ যদি হলিউডের কোনো সিনেমা দেখে কিছু করে তাহলে তার দোষ সিনেমার প্রযোজকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। ডঃ ইসরার আহমেদের ইউটিউব চ্যানেলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য পাকিস্তানের টেলিযোগাযোগ (পিটিএ) দফতর থেকেও ইউটিউব কতৃপক্ষকে বলা হয়। পিটিএ এক বিবৃতি দিয়ে জানায়–ডঃ ইসরার আহমেদের ইউটিউব চ্যানেল শিক্ষামূলক– সেখানে হিংসা-বিদ্বেষ সম্বলিত কিছু নেই।
উল্লেখ্য– ডঃ ইসরার আহমেদ উপমহাদেশের একজন প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ছিলেন। জামাত-এ-ইসলামী হিন্দের ছাত্র সংগঠন থেকে তাঁর পথচলা শুরু। ২০০২ সালে তিনি পরলোক গমন করেন। তাঁর জন্ম ভারতের হরিয়াণার হিসারে। তিনি ১৯৫৪ সালে লাহোরের কিং এডওয়ার্ড মেডিকেল কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তারপর করাচির জামিয়া থেকে ইসলামিক স্টাডিজ নিয়ে পড়াশুনা করেন। তিনি ছাত্র জীবনে আল্লামা ইকবাল এবং আবুল আলা মুওদির সংস্পর্ষে এসেছিলেন।