পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সিগারেট খেতে খেতে একজন আদিবাসী যুবকের মুখে প্রস্রাব করছেন মধ্যপ্রদেশের এক বিজেপি কর্মী। মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলার এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার ভিডিয়োটি ভাইরাল হওয়ার পর নিন্দার ঝড় ওঠে মধ্যপ্রদেশে। প্রথমে অভিযুক্ত প্রবেশ শুক্লা বিজেপি কর্মী একথা অস্বীকার করার চেষ্টা করে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতৃত্ব। পরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত প্রবেশ শুক্লার সেই রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি নেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে তোলা ছবি প্রকাশ করা হলে বিতর্ক বাড়তে থাকে। ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে, শেষ পর্যন্ত এই নিয়ে মুখ খোলেন বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তের অতীতেও অপরাধে জড়িত থাকার রেকর্ড রয়েছে। এমনকি তার বাড়ির একটি অংশ অবৈধভাবে দখল করা জমির উপর তৈরি করা হয়েছিল। এতদিন তা প্রশাসনের নজরে না পড়লেও এখন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রশাসনের সক্রিয়তা চোখে পড়েছে। বুধবার অবৈধ জমিতে থাকা প্রবেশের বাড়ির একটি অংশ প্রশাসনের তরফ থেকে বুলডোজার চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
প্রবেশ বিজেপি কর্মী কিনা, মুখ্যমন্ত্রীকে এই প্রশ্ন করা হলে আকার ইঙ্গিতে তিনি বুঝিয়ে দেন, বিজেপির সঙ্গেই যুক্ত প্রবেশ শুক্লা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধী শুধু অপরাধীই হয়। তার কোনও জাতি-ধর্ম বা দল হয় না। ওই অপরাধীকে যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া যায়, তার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পুলিশকে। কোনও শর্তে তাকে রেয়াত করা হবে না।’
বিজেপি জমানায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। কোথাও দলিত, কোথাও আদিবাসী কোথাও বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের টার্গেট করা হচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। মধ্যপ্রদেশে ঘটনার পর সেখানকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় নেশায় এতটাই মত্ত যে তারা মানুষকে মানুষ বলে মনে করে না। এটা শুধু একজন আদিবাসী যুবক নয়, মধ্যপ্রদেশের কোটি কোটি আদিবাসীর অপমান।
সামনেই মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। সেই রাজ্যের ২১.১ শতাংশ মানুষ আদাবাসী সম্প্রদায়ের। বিরোধীরা এই ঘটনার নিন্দা শুরু করলে শেষ পর্যন্ত নিজেই সরব হয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান।