পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: টাইটানিক দুর্ঘটনার ১১১ বছর অতিক্রান্ত। সেই দুর্ঘটনা আজও রহস্য। সেই অন্ধকার ইতিহাসের প্রতি মানুষের টান এখনও রয়েছে গেছে। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষকে কেন্দ্র করে আটলান্টিক মহাসাগরে বর্তমানে যেমন একাধিক অনুসন্ধান চলছে, তেমনই পর্যটক ও ক্রুদের নিয়েও সেখানে যাওয়া হয়। প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত একটি সাবমার্সিবল সাবমেরিন যায় ইতিহাসকে সামনে থেকে দেখতে। কিন্তু মর্মান্তিক পরিণতি হল এবারেও। ১১১ বছর আগে যেন সেই পুরনো ইতিহাস ফের ফিরে এল।
রবিবার সকালেই ৫ সদস্যদের নিয়ে টাইটানিকের দর্শনে নামে ওই সাবমেরিন টাইটান। জানা যায়, ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর এটির সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। আজ সেই ধনকুবের পাঁচ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। সরকারিভাবে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করল মার্কিন উপকূল রক্ষী বাহিনী এবং ‘ওশানগেট’ সংস্থা।
ওশানগেটের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা মনে করি, আমাদের সিইও স্টকটন রাশ, শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমান দাউদ, হামিশ হার্ডিং এবং পল-হেনরি নারজিওলেট আর নেই। তাঁরা সত্যিকারের অভিযাত্রী ছিলেন। আমরা এই পাঁচ জনের আত্মার শান্তি কামনা করি এবং আমরা তাঁদের পরিবারের পাশে আছি। আমাদের প্রত্যেক কর্মী গভীরভাবে শোকাহত। বিভিন্ন দেশের একাধিক সংস্থার অগণিত পুরুষ ও মহিলারা তাঁদের সন্ধানে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। গোটা ওশানগেট পরিবার তাঁদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাবমেরিনটিতে ফাটল ধরেছিল এবং জলের অত গভীরে প্রচণ্ড চাপে গোটা ডুবোজাহাজটি ফেটে যায়। আর কিছু বুঝে ওঠার আগেই জাহাজটিতে থাকা পাঁচ যাত্রীর মৃত্যু হয়। কারণ, ওই গভীরতায় জলের চাপ সমুদ্রপৃষ্ঠের থেকে অন্তত ৪০০ গুণ বেশি হয়।
১৮ জুন আমেরিকান কোম্পানি ওশানগেটের এই সাবমেরিন টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে যাত্রা শুরু করে। টাইটানিকের ভ্রমণের ধ্বংসাবশেষে পৌঁছানো, সেখানে ঘোরাঘুরি এবং তারপর ফিরে আসা প্রায় আট ঘণ্টা লাগে। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের চারপাশ দেখায়।
এরপর ফিরতেও সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। সাগরের ১২,৫০০ ফুট গভীরতায় টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যেতে ১৮ জুন টাইটান যাত্রা শুরু করলে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই সময়ে ধ্বংসস্তূপের কাছাকাছি পৌঁছনোর কথা। কিন্তু তার ঠিক আগে মাঝপথে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় টাইটান।