পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: চিকিৎসা করাতে কলকাতায় এসেছিলেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ কেন্দ্রের তিনবারের সাংসদ আওয়ামী লিগ নেতা আনোয়ারুল আজিম। বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসা, এসে নিখোঁজ, খুন, সবটাই রহস্যে মোড়া। একাধিক প্রশ্ন উঠেছে আনোয়ারুলে আজিমে নিখোঁজ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। তবে এখনও পর্যন্ত মেলেনি সাংসদের দেহাংশ।
তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, খুনে সুপারি কিলারদের কাজে লাগানো হয়েছে। তাদের দেওয়া হয়েছিল পাঁচ কোটি টাকা। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার পিছনে বহু তথ্য অন্ধকারে রয়েছে, সেই তথ্য আলোয় আনার চেষ্টা করছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশের অনুমান, গত ১৩ মে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে সাংসদ আনোয়ারুল আজিমকে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী কোনও বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়। দেহে যাতে পচন না ধরে, তার জন্য দেহে বিশেষ ফ্রিজে রাখা হয়েছিল। পরে চারটি ট্রলিব্যাগে ভরে লোপাট করা হয়েছে। সেই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় আরও একজনকে। সূত্রের খবর, নিউটাউনের ফ্ল্যাটে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই আনোয়ারুলকে খুন করা হয়েছে। ২০ মিনিটের মধ্যে দেহ টুকরো করে ট্রলিতে ভরা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যেই ফ্ল্যাট পরিষ্কারও করে দেওয়া হয় বলে খবর।
গতকাল একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, লাল রঙের একটি ছোট চার চাকার গাড়ি ঢুকছে নিউটাউনের আবাসনের সামনে। গাড়িটি আবাসনের বাইরে এসে থামে। সেই গাড়ি থেকে নেমে আসেন তিন জন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন বাংলাদেশের আওয়ামী লিগের মৃত সাংসদ আনোয়ারুল আজিম। সঙ্গে ছিলেন আরও দু’জন। সিসিটিভি ফুটেজের এই সূত্র ধরেই লাল রঙের ওই গাড়িটিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। গাড়ির মালিক ও গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
পরে সিসিটিভি ফুটেজ ধরে দেখা যায় সাংসদের সঙ্গে যারা এসেছিলেন, তারা একে একে বাইরে বেরিয়ে যায়, কিন্ত সাংসদকে বের হতে দেখা যায়নি। দুই দেশের তদন্তকারী সংস্থার তথ্য আদান-প্রদানের ভিত্তিতে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে।
এ দিকে, তদন্ত যত এগিয়েছে জানতে পারা যাচ্ছে, সাংসদকে খুনের পরিকল্পনা করা হয় বাংলাদেশেই। এই কাজে সাংসদের ঘনিষ্ঠ কেউ যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ তিনি ভারতে আসবেন জানতে পেরেই খুনের চক্রান্ত করা হয়। জানা গেছে, চার কোটি টাকা দেওয়া নিয়ে আনোয়ারুল আজিমের সঙ্গে তাঁর এক ব্যবসায়ী বন্ধুর গন্ডগোল হয়েছিল, তিনিই এই খুনের মাষ্টারমাইন্ড কি না তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।