পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : বাংলার ক্রিকেটে কালীঘাট ক্লাব এই মুহূর্তে বড় নাম। মোহনবাগান– ইস্টবেঙ্গলের থেকেও বাংলার ক্রিকেটকে রীতিমতো শাসন করে চলছে তারা। ২০০৭-০৮ মরশুমে সিএবি লিগ, সিএবি নক আউট, এ এন ঘোষ, পি সেন সহ জেসি মুখার্জির মতো গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি বড় ট্রফি জিতে রেকর্ড গড়েছে কালীঘাট। যে রেকর্ড বাংলার অন্য কোনও ক্রিকেট ক্লাবের নেই। এর পরের মরশুমে কালীঘাট সিএবির পাঁচটা টুর্নামেন্টের চারটিতে জিতে একটিতে রানার্স হয়।
কালীঘাট ক্লাবের ক্রিকেট ঐতিহ্য নিয়ে বলতে গিয়ে ক্লাবের মাঠ সচিব তথা সিএবি, আইএফএ, মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডান, এরিয়ান ক্লাবের সদস্য আরিফুর রহমান মনু বলেন, ‘কালীঘাট চিরকালই বাংলার ক্রিকেটের সাপ্লাই লাইন। তাবড় তাবড় ক্রিকেটাররা এখানে খেলে গিয়েছেন। মরশুমের পাঁচটি ট্রফির সবক’টিই যেবার কালীঘাট পায়, সেই দলে ছিলেন লক্ষীরতন শুক্লা, অশোক দিন্দা, ঋদ্ধিমান সাহা, সঞ্জীব স্যানাল, সৌরাশিস লাহিড়ীরা। একটা সময় তারা বাংলার ক্রিকেটের মেরুদন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রয়োজনে তাদের পাশে পায় কালীঘাট ক্লাব।’
বাংলার ক্রিকেটে কালীঘাট ক্লাবের আর এক অবদান পি সেন মেমোরিয়াল কোচিং সেন্টার। অ্যাকাডেমির স্টাইলে এখান থেকে নতুন ক্রিকেটার তুলে আনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে কালীঘাট ক্লাব। পি সেন মেমোরিয়াল ট্রফি শুরু হয় প্রবীর কুমার সেনের নামে। ১৯৯১ সালে তৈরি হয় এই পি সেন মেমোরিয়াল কোচিং সেন্টার।এই কোচিং সেন্টার তৈরি করতে যাদের অবদান অনস্বীকার্য তারা হলেন নতু কোলে (এন সি কোলে নামে খ্যাত), বাবলু কোলে, সুনীল দাশগুপ্ত, আলহাজ্ব হবিবুর রহমান, বাচ্চু কোলে, মৃণাল চক্রবর্তী, কানু বাবু, জিৎ ব্যানার্জি, মৃদূল মুতসুদ্দিসহ আরও অনেকে। মতিউর রহমান এই পি সেন মেমোরিয়াল কোচিং সেন্টার পরিচালনা করতেন। তিনি আজও আছেন।
বর্তমানে এই কোচিং সেন্টারের যে পিচ ও নেট রয়েছে তা চালাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করছেন বর্তমান ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা টেস্ট উইকেট কিপার ঋদ্ধিমান সাহা। কে নেই এখানে? বাংলা তথা কেকেআরের হয়ে খেলা সৌরভ সরকার, অভিজিৎ সিকদার, দেবব্রত দাস, কামাল হোসেন প্রত্যেকেই বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গে সঙ্গে কালীঘাট ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে যাচ্ছেন।
কালীঘাট ক্লাবই প্রথম বাংলার মহিলা দল উপহার দেয়। মহিলা ক্রিকেট চালু হয় কালীঘাট ক্লাব থেকেই। শুধু তাই নয় কালীঘাটের হয়ে খেলা লোপামুদ্রা ভট্টাচার্য, রুণা বসু, মিঠু মুখার্জি, রূপা বসু, কেয়া রায়, সন্ধ্যা মজুমদার, চন্দনা মুখার্জি, শর্মিলা চক্রবর্তী, গার্গী ব্যানার্জিরা নিয়মিত ভারতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন।বর্তমানে কালীঘাটের ক্রিকেট টিমের কোচ সঞ্জীব সান্যাল। বাংলা দলে যার অবদান অনস্বীকার্য। সৌরভ সরকার গোটা দলটাকে নিজের পরিবারের মতো করে গাইড করছেন। সঙ্গে রয়েছেন শুভম চ্যাটার্জির মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটারও। বাংলা দলে তিনি এখনও সুযোগ না পেলেও অধিনায়ক সৌরভের কথায়– ‘শুভম দারুণ ক্রিকেটার। আমি নিশ্চিত ও কোনও একদিন বাংলা দলে সুযোগ পাবেই।’