পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদ কমপ্লেক্সে ইহুদিদের প্রার্থনা করার অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েলের একটি আদালত। বৃহস্পতিবার দেশটির একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ রায় দেয়।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ইহুদিরা চাইলে নীরবে প্রার্থনা করতে পারবেন, এটি তাদের অপরাধ বলে গণ্য হবে না। দীর্ঘদিন ধরে চুক্তির অধীনে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল-আকসায় নামাজ পড়েন এবং পশ্চিম দেয়ালে প্রার্থনা করেন ইহুদিরা। তবে আদালতের এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন ফিলিস্তিনিরা। তাদের অভিযোগ, আল-আকসা দখলের জন্যই এ রায় দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের রাবাই আরিয়েহ লিপ্পো নামে এক দখলদার আল-আকসা কমপ্লেক্সে প্রার্থনা করায় তার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তিনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ইহুদিদের আল-আকসা কমপ্লেক্সে নীরবে প্রার্থনা করার অনুমতি দেয়।
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ ইব্রাহিম স্তাইয়া ইসরায়েলের আদালতের সিদ্ধান্তের পর আল-আকসা মসজিদ কমপ্লেক্সের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পবিত্র আল-আকসা মসজিদে নতুন বাস্তবতা আরোপে ইসরায়েলি অপতৎপরতার আমরা বিরোধিতা করছি।
তেল আবিব ও আম্মানের ১৯৯৪ সালের শান্তি চুক্তির পর আল-আকসা মসজিদের তত্বাবধায়ক ছিল জর্ডান। ইসরায়েলের এ রায়কে আল-আকসা মসজিদের ইতিহাসগত ঐতিহ্য এবং আইনি মর্যাদার গুরুতর লঙ্ঘন বলে সমালোচনা করেছে আম্মান।
আল-আকসা মসজিদ, মসজিদুল আকসা বা বাইতুল মুকাদ্দাস নামেও পরিচিত জেরুজালের পুরনো শহরে অবস্থিত ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ এটি। এর সাথে একই প্রাঙ্গণে কুব্বাত আস সাখরা, কুব্বাত আস সিলসিলা ও কুব্বাত আন নবী নামক স্থাপনাগুলো রয়েছে। স্থাপনাগুলো সহ এই পুরো স্থানটিকে হারাম আল শরিফ বলা হয়। এছাড়াও স্থানটি “টেম্পল মাউন্ট” বলে পরিচিত। ইহুদি ধর্মেও আল আকসা পবিত্র বলে বিবেচিত হয়।
ইসলামের বর্ণনা অনুযায়ী মুহাম্মদ (সা) মিরাজের রাতে মসজিদুল হারাম থেকে আল-আকসা মসজিদে এসেছিলেন। এখান থেকেই তিনি আসমানের দিকে যাত্রা করেন। ইতিহাসবিদ, স্কলার ইবনে তাহমিয়ার মতে, আসলে সুলায়মান(আ) এর তৈরি সম্পূর্ণ উপাসনা স্থানটির নামই হল মসজিদুল আল-আকসা।সহীহ আল বোখারীর আবু যর গিফারী বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায় এটি সর্ব প্রথম আদম(আলাইহিস সালাম) তৈরি করেছিলেন এবং এটি ছিল পৃথিবীর দ্বিতীয় মসজিদ। রাসূল (সাঃ)কে হাদিসে জিজ্ঞেস করা হয়েছে এটি বায়তুল্লাহ নির্মাণের কত দিন পর নির্মাণ করা হয়েছিল? তিনি বলেন, চল্লিশ বছর পর।