পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবালকে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এ সময় তার তিন সহযোগীরও সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
শনিবার দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিথিলা জাহান নিপার আদালতে অভিযুক্তদের তোলা হয়। পুলিশ আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড চায় ।আদালত তাদের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।রিমান্ড শুনানি শেষে দুপুর ১টায় কালো গাড়িতে করে তাদের আদালত ভবন থেকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয় ইকবাল ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের। বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে অভিযুক্ত চারজনকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বহু সদস্য মোতায়ন ছিল। জোরদার করা হয়েছিল নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
কুমিল্লা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভির আহমেদ জানান, ধর্ম অবমাননার মামলায় ইকবালসহ চারজনকে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিথিলা জাহান নিপার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে তিনি সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ মামলায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে পাকড়াও করা হয়েছে। এই অভিযুক্তরা হল, ইকবাল হোসেন, আশিকুর রহমান ফয়সাল, হুমায়ুন ও ইকরাম।
তানবির জানান,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল পূজামণ্ডপে কুরআন রাখার কথা স্বীকার করেছে। ইকবাল জানিয়েছে কুমিল্লায় অশান্ত পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে সে প্রথমে কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা এলাকায় যায়। পরে সেখান থেকে ট্রেনে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকার সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে ইকবালকে আটক করে পুলিশ। পরে শুক্রবার দুপুরে তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে এনে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তানবির আরও জানান, ”এর পেছনে কারা জড়িত, আমরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি। সেজন্য একটু সময় লাগবে। আমরা সবকিছুই খতিয়ে দেখছি,”।এদিন ইকবাল হোসেন বা অপর তিনজনের পক্ষে আদালতে কোনও আইনজীবী ছিলেন না।
বাকি তিনজনের মধ্যে ইকরাম হোসেন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে মণ্ডপে কুরআন পাওয়ার তথ্য জানিয়েছিল। হুমায়ুন আহমেদ ও ফয়সাল আহমেদ স্থানীয় একটি মাজারের খাদেম, যেখানকার মসজিদ থেকে কুরআন চুরির আগে ইকবাল হোসেনকে সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা মহানগরীর নানুয়ার দিঘিরপাড় পূজামণ্ডপে কুরআন রাখা নিয়ে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় নয় মামলায় ৭৯১ জনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় পাঁচটি, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় দুটি এবং দাউদকান্দি ও দেবীদ্বার থানায় একটি করে মামলা হয়েছে। ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলায় ৭০০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৮ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।