পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি, অক্সফাম ইন্ডিয়া “হু টেলস আওয়ার স্টোরিজ ম্যাটারস: রিপ্রেজেন্টেশন অব মার্জিনালাইজড কাস্ট গ্রুপস ইন ইন্ডিয়ান মিডিয়া” শিরোনামে একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। যাতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে উচ্চবর্ণের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে ৯০%। এমনকি একজন দলিত বা আদিবাসীও ভারতীয় মূলধারার মিডিয়ার নেতৃত্বের পুরোভাগে নেই। এর পাশাপাশি মুসলমানের প্রতিনিধিত্ব ছিল মাত্র ৩ শতাংশ।
২০০৬ সালে ঠিক এই বিষয় নিয়েই একটি সমীক্ষা করেন সমাজকর্মী এবং মনোবিদ যোগেন্দ্র যাদব। যোগেন্দ যাদব বলেন এই সমীক্ষা প্রমান করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে উচ্চবর্ণের আধিপত্যবাদ।অক্সফামও যোগেন্দ্রর এই সমীক্ষার তথ্যকে অনুমোদন করেছে।
যোগেন্দ্র যাদব ২০৬ সালে মন্ডল ২ আন্দোলনের দিনগুলির কথা স্মরণ করেন । যে সময় তিনি এই সমীক্ষা করেছিলেন সেই সময়তেও কিন্ত ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জুড়ে বর্ণ, লিঙ্গ এবং ধর্মের প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি। যা নিশ্চিত ভাবে একটি খারাপ সময়কে নিশ্চিত করে। বলছেন যোগেন্দ্র যাদব।
সেই সময়ের কথা মনে করে যোগেন্দ্র বলেন “আমরা ৪০ টি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম (হিন্দি এবং ইংরেজি টিভি চ্যানেল এবং সংবাদপত্র) একটি তালিকা তৈরি করেছিলাম এবং সেখানে কাউকে তাদের শীর্ষ ১০ জন সম্পাদক-স্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের তালিকা প্রস্তুতের অনুরোধ করেছিলাম। তারপরে আমরা প্রতিটি নামের বিপরীতে লিঙ্গ, ধর্ম এবং বর্ণের তথ্য রেকর্ড করেছি। আমরা ৪০০ জনকে শর্টলিস্ট করেছিলাম কিন্তু শুধুমাত্র ৩১৫ জনের তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম।
এই তালিকার একটি বিস্ময়কর দিক ছিল ৮৮ শতাংশ ছিল উচ্চবর্ণের হিন্দু, এমনকি এই তালিকায় একজনও দলিত বা আদিবাসী কে আমরা খুঁজে পাইনি। এই ক্ষেত্রে আরও প্রাসঙ্গিক, ওবিসি, যাদের জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ শতাংশ বলে অনুমান করা হয়, শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া পেশাদারদের মধ্যে তাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। মহিলাদের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৬ শতাংশ।
যাদব আরও বলেছেন যে “জাতীয় মিডিয়ায় ১৪ শতাংশ মুসলমানের মধ্যে প্রতিনিধিত্ব ছিল মাত্র ৩ শতাংশর । দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি বলছেন নির্লজ্জ সংখ্যালঘু বিরোধী শিরোনামগুলি নিয়মিতভাবে মিডিয়াতে তৈরি হয় এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ভারতে বর্ণ সংঘাতের চেয়ে ৯ গুণ বেশি কভারেজ পায়।”
২০০৬ সালে যোগেন্দ্র যাদব যে সমীক্ষার তথ্য তুলে ধরেছিলেন তার থেকে আজ ২০২২ এও পরিস্থিতি যে খুব একটা বদলেছে তা নয়।
অক্সফাম ইন্ডিয়ার সমীক্ষার রিপোর্ট অন্তত সেই কথাই বলছে। দেশের ২০ শতাংশ সংবাদমাধ্যমে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ সংবাদ নিয়ন্ত্রিত হয়।