পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বাগুইআটি কাণ্ডে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভের পারদ চড়ছে। ইতিমধ্যে এই কাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্যের ডিজিকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাইগুআটি থানার আইসিকে সরিয়ে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিআইডির হাতে।
এদিকে এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী। ঘটনার ১৫ দিন পার হয়ে গেলেও এখন মূল অভিযুক্ত পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদিকে এই ঘটনায় একগুচ্ছ প্রশ্ন সামনে উঠে এসেছে। একদিকে যেমন পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্ন উঠেছে, অন্যদিকে বসিরহাট মর্গে দুই ছাত্রের দেহ পড়ে থাকলে কেন পুলিশের কাছে কোনও খবর ছিল না তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে এই ঘটনায় অপহরণের পর মুক্তিপণের দাবি তোলা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু শুধুমাত্রই মুক্তিপণের জন্য এই নৃশংস ঘটনার ঘটেছে! এদিকে সূত্রের খবর, অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীর স্ত্রী পূজার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় অতনুর। পরে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় অতনুর বাড়ে ভাই অভিষেকের সঙ্গে। আর সেই ঘনিষ্ঠতা সূত্রেই দুই কিশোরের সঙ্গে আক্রোশ থেকে শত্রুতা তৈরি হয় সত্যেন্দ্রের। এদিকে তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে এসেছে বেশ কিছু তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, অতনু আর অভিষেকের অনলাইনে সাট্টা জাতীয় খেলায় আসক্তি হয়েছিল। গেম খেলেই ৫০ হাজার টাকা জেতে দুই কিশোর। সেই টাকা দিয়েই সেকেন্ড হ্যান্ড হাইস্পিড স্পোর্টস বাইক কেনার পরিকল্পনা করে। সত্যেন্দ্রর বাইকের পার্টস আর সার্ভিসের দোকান থাকায়, ৫০ হাজার টাকায় নামি সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। বাইক কিনে দেব বলে আরও টাকা চায় সতেন্দ্র। আর সাট্টার চক্করে পড়ে সত্যেন্দ্রর কাছে কয়েক হাজার টাকা ঋণ নেয় দুই কিশোর।
একদিকে স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আর টাকা ফেরত না দেওয়া, এই নিয়ে দুই কিশোরের সঙ্গে তিক্ততা বাড়ে সত্যেন্দ্রর। পরিকল্পনা করেই সেলফ ড্রাইভ গাড়ি ভাড়া করে অভিযুক্ত। খুনের জন্য পাঁচজনকে ভাড়া করে সে। ধৃতদের জেরা করে এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
ঘটনার দিন বাইক কেনার নাম করে প্রথমে রাজারহাট নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাইক পছন্দ না হওয়ায় সেখান থেকে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে গাড়িতে এগোতে রাস্তাতেই খুন করে সেখানে ফেলে দেওয়া হয় দেহ। দুই ছাত্রকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় পুলিশ সূত্রে খবর। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনায় একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মৃত অভিষেক নস্কর ও অতনু দে’র বাবা।
অভিষেকের বাবা বলেন, পুলিশ কি করছে? পুলিশ কিছুই করছে না। দেহ উদ্ধার করার পর মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে বলা হচ্ছে, ‘কি রে বডি পেয়ে গেছিস? দুটো বডি একসঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিস? এখন খুব ভালো লাগছে? আমরা সিবিআই তদন্ত চাই।
অতনু দে’র বাবা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সিআইডির তদন্তের নির্দেশে খুব খুশি হয়েছি। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হোক। যারা মদদ জুগিয়েছে তাদেরেও গ্রেফতার করুক। ছেলে মারা গেছে ১৬/১৭ দিন হয়ে গেল, দায়িত্ব নিতে পারিনি বলেই আইসিকে তো ক্লোজ করা হয়েছে।