পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রায় দুমাস অতিক্রান্ত। এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারল না সংঘর্ষ বিধবস্ত মণিপুর। কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে চলা সংহিসতার ঘটনায় প্রায় ১০০’র বেশি প্রাণ খোয়া গিয়েছে। বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ। চরম দুর্ভোগ ও অশান্তিতে দিনকাটাচ্ছে মণিপুরবাসী। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধী থেকে রাজ্যবাসী।
সোমবার আইটিএলএফ (আদিবাসী উপজাতি নেতাদের ফোরাম) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের কোনও ধরনের ভাষণ শুনতে অস্বীকার করে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলল। আইটিএলএফ-এর মুখপাত্র গিঞ্জা ভুয়ালজং বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন। মণিপুরে বহু নিরীহ মানুষের প্রাণ খোয়া গেছে, এক চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছে কুকি জো উপজাতিরা। অশান্তির আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং অনেক দেরিতে তাদের কাছে পৌঁছেছেন। ভুয়ালজং-এর কথায়, ১০৬ জন উপজাতি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, ২০১টি গ্রাম, ৫ হাজার বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। ৩৫৫টি চার্চ ধবংস হয়েছে, ৪১,৪২৫ উপজাতি বাস্তচ্যুত হয়েছে। এতগুলি নিরপরাধ জীবন শেষ হয়ে গেল, সম্পত্তির ক্ষতি হল, রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া শান্তির কথা বলে লাভ নেই।
আইটিএলএফ-এর মুখপাত্র গিঞ্জা বলেন, আমরা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছি যেখানে কুকি-জো সম্প্রদায় আর মেইতেইদের একসঙ্গে থাকা সম্ভব নয়।
সাংবাদিকদের সামনে গিঞ্জা জোরের সঙ্গে দাবি করেন, এন বীরেন সিং, বর্তমান জাতিগত সহিংসতার জন্য দায়ী। তার কুকি-জো সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণার ফলে এই হত্যালীলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী শান্তির আশ্রয়দাতা হতে পারেন না।
উল্লেখ্য, নয়াদিল্লি থেকে ফেরার পথে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। রবিবার ইম্ফলে বীরেন সিং বলেন, সমবেত সহযোগিতার মাধ্যমে শান্তি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করা হবে। সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত রাজ্যে শান্তি ও স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য উভয় সরকারেরই প্রথম অগ্রাধিকার। মুখ্যমন্ত্রী সিং আরও জানান, ৪৭টি উত্তেজনাপূর্ণ এলাকাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে জোর কদমে প্রয়াস চালানো হচ্ছে। মোতায়েন হয়েছে ৪০ হাজার নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রমাগত মণিপুরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রতিটি বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন।