পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: মাওলানা আজাদের অত্মীয়া (নাতনি) হুসনারা সেলিম, মাওলানা আজাদের উত্তরাধিকার বাঁচিয়ে রাখছেন বলে মন্তব্য করেন প্রাক্তন বিচারপতি ও প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন চেয়ারম্যান মার্কন্ডেয় কাটজু। কাটজু বলেন- হুসনারা সেলিমের সঙ্গে কথা বলে আমি তাঁর কাজ সম্পর্কে জানতে পারি।
কাটজু বলেন, মাওলানা আজাদ আমার আদর্শ। একজন প্যাক্টিসিং মুসলিম হয়ে, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও দেশ ভাগের কট্টর বিরোধিতা করেছিলেন তিনি।
দেশ ভাগের বিরোধীতা করে, মৌলানা আজাদ ২৩ অক্টোবর, ১৯৪৭ সালে দিল্লির জামা মসজিদে মুসলমানদের উদ্দেশ্যে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সেকথাও উল্লেখ করেন কাটজু।
কাটজু বলেন, স্বাধীনতার কয়েক বছর আগে, মৌলানা আজাদ ভারতীয় মুসলমানদের সতর্ক করে বলেছিলেন, জিন্নাহ ও মুসলিম লীগের পথ বিপর্যয়কর হবে। আজ তার ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছে। ভারত ভাগের কারণেই ভারতীয় মুসলমানরা রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়েছেন। এখন তাদের উপর প্রায়ই নৃশংসতা চালানো হয়। অন্যদিকে ধসে পড়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণেই সন্ত্রাসের রাজত্ব চলছে সেখানে।
কাটজু বলেন, এটা দুঃখজনক ঘটনা যে কয়েক বছর আগে, মাওলানা আজাদের জন্মবার্ষিকীতে, তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে সংসদে মাত্র তিনজন সদস্য উপস্থিত হয়েছিলেন। আজাদকে ভুলিয়ে দেওয়ার মানসিকতার নিন্দা করেন কাটজু।
তিনি বলেন, ভারতের গভর্নর জেনারেল সি. রাজাগোপালচারী দেশ ভাগকে জোরালোভাবে সমর্থন করেছিলেন। অন্যদিকে এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করেন আজাদ। এই নিয়ে তাঁদের দুজনের সম্পর্ক এতটাই তিক্ত হয়ে পড়ে যে এলাহাবাদের আনন্দ ভবনে একই ছাদের নিচে গোপালাচারী ও আজাদকে একসঙ্গে রাখতে হিমশিম খেতে হয় পন্ডিত জওহরলাল নেহরুকে। তখন ওই সমস্যা সমাধান করতে ডাক পড়ে প্রাক্তন বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাটজু-র ঠাকুর্দা ড. কাটজুর।
উল্লেখ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সম্প্রীতির জন্য মৌলানা আজাদ ফাউন্ডেশন স্থাপন করেছেন কলকাতার বাসিন্দা ও আজাদের আত্মীয়া হুসনারা সেলিম। কাটজু বলেন, মাওলানা আজাদের ব্যক্তিগত জীবনের বিবরণও তুলে ধরেছেন হুসনারা, যেগুলো সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানেন।
প্রাক্তন বিচারপতির মতে, আজাদ যে মশাল জ্বালিয়েছেন, তা বাঁচিয়ে রাখার কাজ করছেন হুসনারা। মার্কন্ডেয় কাটজু তাঁর সংস্থা ইন্ডিয়ান রিইউনিফিকেশন অ্যাসোসিয়েশনের-র ভাইস চেয়ারপার্সন হিসেবে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন হুসনারা সেলিমকে।