পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক বিশ্বাসের ও ভরসার। দুটি মানুষের মধ্যে সেই মনের মিলনের মাধ্যমেই এক সুন্দর সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। কিন্তু সেই সম্পর্কই অনেক সময় এক বিকৃত মানসিক রুচির পরিচয় দেয়, তখন তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। এই রকমই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তরপ্রদেশ। লাগাতার স্বামী, তার বন্ধুবান্ধব সহ সৎ ছেলের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবি জানালেন এক অসহায় মহিলা।
রাষ্ট্রপতি দ্রোপদী মুর্মুকে চিঠি পাঠিয়ে ৩০ বছর বয়সী নির্যাতিতা মহিলা স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবি জানিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন ন্যায়বিচারের ওপরে আস্থা হারিয়েছেন তিনি। সেখানে গত ৯ অক্টোবর পুরাণপুর কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা এফআইআর-এ উল্লেখ করা অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও। অন্যদিকে অভিযুক্তরা নির্যাতিতাকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য লাগাতার হুমকি দিচ্ছে। বলা হচ্ছে মুখ খুললেই এর পরিণতি ভয়ানক হবে’।
নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, এটি তার দ্বিতীয় বিবাহ। প্রথম বিয়ে থেকে বিচ্ছেদের তিন বছর পরে তিনি পরে চণ্ডীগড়ের ৫৫ বছরের এক কৃষককে বিয়ে করেছিলেন। এর পরেই তাঁর সৎ ছেলে তাঁকে অবৈধ সম্পর্কের জন্য জোরাজুরি করেন। রাজি না হলে তার ওপর মানসিক অত্যাচার চালাতে থাকেন। তার ওপরে শারীরিক নির্যাতন চলতে থাকে। অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তিনি একসময় চুপ করে যান।
মহিলার দাবি, তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন এবং ডিএনএ পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে পুরাণপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করা হয়। গত ১৮ জুলাই তাঁকে চণ্ডীগড়ে তাঁর স্বামীর খামারবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তাঁর স্বামীর কয়েকজন আত্মীয় এবং দুই সহকর্মী তাঁকে ধর্ষণ করেন। পুরাণপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নিরুপায় হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। আদালত এই বিষয়ে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেয়।
পিলিভিটের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার প্রভু জানিয়েছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) একাধিক ধারা, ৩৭৬ ডি (গণ-ধর্ষণ), ৩২৩ -(স্বেচ্ছায় আঘাত করা) এবং ৫০৪ (ইচ্ছাকৃত অপমান)-এর অধীনে পুরাণপুর কোতোয়ালি থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
এফআইআর-এ মহিলার স্বামী ও সৎ ছেলে-সহ মোট পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মূল ঘটনা জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বর্তমানে নির্যাতিতা মা, দুই ভাই এবং প্রথম পক্ষের ছয় বছরের ছেলের সঙ্গে থাকছেন। তবে প্রতি মুহূর্তেই ভয় তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। এই রকম অবস্থায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবি জানিয়েছেন।