পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ অনুমতি ছাড়া তাঁর ছবি কীভাবে সামনে নিয়ে আসা হল-তা নিয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন শ্লীলতাহানির অভিযোগকারিনী। বৃহস্পতিবার রাজভবন থেকে ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয়েছে। বুধবারই জানানো হয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পুলিশ ছাড়া রাজ্যের যে কোনও বাসিন্দা ওই ফুটেজ দেখতে পারবেন।
রাজভবনের নর্থ গেটের সামনে বসানো দু’টি ক্যামেরার ফুটেজ দেখানো হয়। সেখানে অভিযোগকারী মহিলাকে রাজভবনের দিক থেকে বেরিয়ে পুলিশ আউটপোস্টের দিকে হন্তদন্ত হয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। কিছু ক্ষণ পর আউটপোস্ট থেকে বেরিয়ে পাশের ঘরে যান তিনি।
রাজভবনের তরফে ঘটনার দিনের এই সিসিটিভি ফুটেজ জনসমক্ষে আনা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এ দিন আগ্রহী ব্যক্তিরা রাজভবন চত্বরে গিয়ে সেই ফুটেজ দেখে এসেছেন। যার কিছু কিছু অংশ সংবাদমাধ্যমেও প্রচারিত হয়। যা দেখতে পান অভিযোগকারিনীও। এরপরই অভিযোগকারিনী সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘রাজ্যপাল মহাশয় নিজে এরকম একটা কুরুচিকর কাজ করলেন। এখন আবার নিজের দোষ ঢাকতে হাস্যকর নাটক মঞ্চস্থ করলেন। সেটা করতে গিয়ে উনি আমার অনুমতি ছাড়া আমার ফুটেজ প্রকাশ্যে আনলেন। আমি জানতাম ভারতীয় আইন অনুযায়ী, অভিযোগকারিণীর পরিচয় গোপন রাখা উচিত। উনি প্রথম থেকেই এই তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। এর আগেও উনি অপরাধ করেছেন। এখন আবার আমার অনুমতি ছাড়া ফুটেজ ভাইরাল করে নতুন করে অপরাধ করলেন। আমি এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’
শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠলে অভিযোগকারিণীর নাম, পরিচয় বা ছবি, কোনওটাই প্রকাশ করা যায় না। এ ক্ষেত্রে সেই নিয়ম রাজ্যপাল লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ মহিলার। তিনি জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় প্রথম থেকেই পুলিশ তাঁর পাশে আছে। তাই এ ক্ষেত্রেও পুলিশের পরামর্শ নেবেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথম থেকেই উনি (রাজ্যপাল) তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। উনি যদি সৎ হতেন, প্রথম দিনেই ফুটেজ পুলিশকে দিয়ে দিতেন। আসলে নিজের পদে থেকে উনি যা খুশি তাই করে চলেছেন। নিজের অসুস্থ মস্তিস্কের পরিচয় দিচ্ছেন। কিন্তু আমি এবং আমার পরিবার মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত।’’
উল্লেখ্য, রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী গত বৃহস্পতিবার বোমা ফাটান। দাবি করেন, রাজ্যপাল বোস তাঁর দুবার শ্লীলতাহানি করেন। হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। যদিও অভিযোগ খারিজ করে দেন সি ভি আনন্দ বোস। এই ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক যোগসাজশ রয়েছে বলেই মনে করছেন তিনি। আর তার পরই রাজভবনের তরফে বিবৃতি জারি করা হয়।
সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগ রাজভবনে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এমনকী ভোটের সময় পুলিশ রাজভবনে প্রবেশের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগে তোলপাড় রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে কলকাতা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজও চেয়ে পাঠানো হয় বলেই খবর। যদিও তা এখনও কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের হাতে এসে পৌঁছয়নি বলেই জানা গিয়েছে। তারই মাঝে রাজভবনের এই পদক্ষেপ যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।