পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গাজার ঐতিহাসিক গ্রেট ওমরি মসজিদ বা ‘বড় মসজিদ’ ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাইল। যায়নবাদীদের আগ্রাসনে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মসজদিটি এখন ধ্বংসস্তূপ। এই মসজিদটি ইসলামিক ইতিহাসে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবাহী। গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলায় অনেক মসজিদ-চার্চসহ শতাধিক ‘ঐতিহ্য’ ধ্বংস হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে ২,০০০ বছরের পুরনো সেন্ট পরফিরাস চার্চও। এছাড়া বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীন রোমান কবরস্থান ও জাদুঘরেও আঘাত হেনেছে নেতানিয়াহুর পাঠানো ফাইটার জেট। হামাস কর্মকর্তারা ইসরাইলের এ কাজকে ‘জঘন্য ও বর্বর অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এ ব্যাপারে ইসরাইলি সেনা কোনও মন্তব্য করেনি।
শুক্রবার ইসরাইলি হামলার পর ওমরি মসজিদটির কেবল মিনার দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মসজিদটির বাকি সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়। পঞ্চম শতক থেকে স্থানটি পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল। জানা যায়, একটি বায়জেন্টাইন চার্চের স্থানে সপ্তম শতকে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাযিয়াল্লাহু আনহু-র নামে মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছিল।
হজরত ওমর ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ও প্রধান সাহাবীদের অন্যতম। নগাজা সিটির ওল্ড টাউনে অবস্থিত মসজিদটি পূর্বের কয়েকটি সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। একবার ভূমিকম্পেও ক্ষতির মুখে পড়েছিল। তবে প্রতিবারই একে নতুন করে নির্মাণ করা হয়। হামাস জানায়, ইসরাইলের একের পর এক বোমা হামলায় ফিলিস্তিনের অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। এসব স্থাপনা রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে ইউনেস্কোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি। গাজার পর্যটন ও প্রত্নতাত্ত্বিক মন্ত্রক জানিয়েছে, হামলা শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১০৪ টি মসজিদ ধ্বংস করেছে ইসরাইল। বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্বরতার সব মাত্রা পার করে ফেলেছে ইসরাইলি সেনা। হামাসের হামলার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে গাজাকে প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস করার মিশনে নেমেছে দখলদাররা। প্রতিদিনই গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হচ্ছে।
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এখনও পর্যন্ত ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে কমপক্ষে ৭০০০ জনই শিশু। এছাড়া ১৯ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে।