পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: যায়নবাদী ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে কাতারের মধ্যস্থতায় ৪ দিনের যুদ্ধবিরতি হতে চলেছে। এ বিষয়ে যুদ্ধরত দুই পক্ষ সম্মত হলেও উভয়েরই বেশকিছু শর্ত রয়েছে। এবার জানা গেল, সব কিছু ঠিকমতো চললে এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়তে পারে।
কাতার জানিয়েছে, বন্দি বিনিময় চুক্তি ও যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হলে শেষ পর্যায়ে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। ৪৭ দিনের যুদ্ধ শেষে সই হওয়া যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে হামাস-এর বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেননা, ইসরাইল হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল করার ঘোষণা করেও এখন পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
সূত্রের খবর, গাজায় হামাসের রণকৌশল বুঝতে পারেনি ইহুদি সেনারা। ফলে তাদের অনেক ট্যাঙ্ক ও অস্ত্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। নিহত হয়েছে আইডিএফের অনেক সদস্য। কাতারের বিদেশমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানায়, পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সময়কাল ঘোষণা করা হবে।
আরও বলা হয়, চুক্তি বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে বন্দি বিনিময়ের সংখ্যাও বাড়তে পারে। এর আগে গাজায় হামলা বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করে ইসরাইলের মন্ত্রিসভা। তবে এই বিরতি শেষে গাজায় আবারও ইসরাইলি বাহিনী অভিযান শুরু করবে বলে ঘোষণা দেন ইহুদি প্রধানমন্ত্রী । নেতানিয়াহু বলেন, ’আমরা একটি যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি এবং যতদিন আমাদের লক্ষ্য পূরণ না হয়, ততদিন এই যুদ্ধ চলবে। গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হলেও, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ হয়নি।’ এদিকে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে হামাস জানায়, তাদের যোদ্ধাদের হাত বন্দুকের ট্রিগারেই আছে। ইসরাইল যদি কোনওভাবে এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে তবে হামাসও তাৎক্ষণিকভাবে তার জবাব দেবে।
যুদ্ধবিরতিতে হামাস ও ইসরাইলের শর্ত
হামাস জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় সব এলাকায় আকাশ ও স্থলপথে অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকবে। এছাড়াও চুক্তি অনুযায়ী ইসরাইলি সামরিক যান চলাচলও বন্ধ থাকবে। চিকিৎসা উপকরণ, জ্বালানিসহ মানবিক সহায়তা নিয়ে শত শত ট্রাক সীমান্ত পেরিয়ে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ইসরাইল কর্তৃপক্ষ এসব ট্রাককে গাজায় ঢোকার অনুমতি দেবে।
দক্ষিণ গাজায় চার দিনের জন্য ড্রোন ওড়ানো বন্ধ রাখতে সম্মত হয়েছে ইসরাইল। আর উত্তর গাজায় প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা ড্রোন ওড়ানো বন্ধ রাখা হবে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা অবস্থায় গাজার যেকোনও এলাকা থেকে যে কাউকে আটক করা কিংবা কারও ওপর হামলা না করার বিষয়েও সম্মত হয়েছে ইসরাইল।
এদিকে ইসরাইলি জেলে থাকা ফিলিস্তিনের বন্দিদেরও কয়েক ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। প্রতি ১০ জন ইসরাইলি বন্দির বিনিময়ে ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তির শর্তারোপ করা হয়েছে। চুক্তির আওতায় ১৫০ থেকে ৩০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
ওদিকে, হামাসের হাতে আটক ৫০ জনের মতো বন্দিকে আগামী চার দিনের মধ্যে মুক্তি দেওয়া হবে। তাদের নিরাপদে ইসরাইলে ফেরত আনার ব্যবস্থা করা হবে।