কৌশিক সালুই, বীরভূম: এবার বীরভূমের দুই ব্যবসায়ী জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন।
বরাত পাইয়ে দেওয়ার নাম করে নগদ টাকা ও চারচাকা গাড়ি উপহার দেওয়া হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে সেই বরাত বাতিল হয়ে গেলেও সেই উপহারের গাড়ি বা টাকা ফেরত দেননি অনুব্রত মণ্ডল দাবি ব্যবসায়ীদের।
জেলা তৃণমূল সুপ্রিমো সিবিআই হেফাজতে আসতেই তার বিরুদ্ধে সরব হলেন ওই ব্যবসায়ীরা।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে। দুই অটোমোবাইল ব্যবসায়ী অরূপ রতন ভট্টাচার্য এবং প্রবীর মন্ডল বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন। তাদের বাড়ি ময়ূরেশ্বর থানার কোটাসুরের কাছে নারায়ন ঘাঁটি।
সিউড়ি,বাঁকুড়া,আসানসোল, বর্ধমান সহ কয়েকটি জায়গায় তাদের বাইক ও চারচাকা গাড়ির ব্যবসা।
তাদের অভিযোগ টেন্ডার পাওয়ার জন্য জেলা তৃণমূল সুপ্রিমোকে দফায় দফায় পাঁচ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা এবং একটি চার চাকা গাড়ি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালে। ওই ব্যবসায়ীদের আরও দাবি, ১০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল।
অনুব্রত মণ্ডলকে সরাসরি দেড় কোটি টাকা ২০১৮ সালের মার্চ মাসে এবং বাকি টাকা তার দেহরক্ষী সেহেগাল হোসেনকে দেওয়া হয়েছিল পরবর্তী সময়ে। দুজনেই বর্তমানে বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন। টেন্ডার প্রক্রিয়াটি ছিল ময়ূরাক্ষী নদীর তিলপাড়া জলাধারের নব্যতা বাড়ানোর জন্য নদীগর্ভে জমে থাকা বালি বা পলিমাটি সরাতে হবে। সেই টেন্ডার প্রক্রিয়াটি বীরভূম জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে করা হলেও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আইননি জটিলতায় তা বাতিল করে দেওয়া হয়।
ওদিকে ওই ব্যবসায়ীদের দাবি, কাজ শুরু করতে করতেই জেলা তৃণমূল সভাপতির দাবি মতো পুরো টাকা না দেওয়াই তাদেরকে সরিয়ে অন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু জানা যায় আইনগত জটিলতার কারণেই সেই টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছিল।
দুই অটোমোবাইল ব্যবসায়ী অরূপ রতন ভট্টাচার্য এবং প্রবীর মন্ডল বলেন,”ময়ূরাক্ষী নদীর তিলপাড়া জলাধারের নব্যতা বাড়ানোর জন্য যে টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়েছিল সেই কাজ পাওয়ার জন্য ৫ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা ও গাড়ি উপহার হিসেবে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে আমরা দিয়েছিলাম। কিছু টাকা অনুব্রত মণ্ডল কে সরাসরি এবং বাকি টাকা তার দেহরক্ষী শেহেগাল হোসেনকে।
পরবর্তী সময়ে আমাদের সেই ঠিকা বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঠিকার বিনিময়ে যে টাকা এবং গাড়ি আমরা দিয়েছিলাম তা পরবর্তী সময়ে চাইতে গেলে অনুব্রত মণ্ডল গাজা কেশে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল আমাদেরকে। আমরা তা এখনো পর্যন্ত ফেরত পাইনি।
বর্তমানে আমাদের আর্থিক কারণে সমস্ত ব্যবসা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তি হয় আমরা ভয়ে সেই সময় মুখ খুলতে পারিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা মুখ খুলতে বাধ্য হলাম”।