পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘদিনের অনুশীলনই ডাক্তার কামরুল ইসলামের সাফল্যের হাতিয়ার। কোনও টাকা ছাড়াই হাজারের বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন ডাক্তার কামরুল ইসলাম। এক সাক্ষাৎকারে ডাক্তার কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাঁর কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন কথা।
তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে কুরবানির দিন যখন খাসি-গরুর কুরবানি হয়, সেখান থেকে ওই পশুদের কিডনি এনে অপারেশন থিয়েটারে বসতাম। তা সেলাই করা যায়, দিনের পর দিন তা প্র্যাকটিস করতাম। সেলাই করার পর দেখতাম, ধমনী, শিরা কেমন থাকে। তারপরই ভাবতে থাকি কিভাবে মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপন করা যায়। ওই ভাবনা থেকেই এই সাফল্য।
তবে কর্মজীবনের শুরুতে সার্জারির দিকে আগ্রহ ছিল না তাঁর। তখন ভাবতেন, ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি খুব সহজ কাজ নয়। ইচ্ছে হলেই এটা করা যায় না। ডাক্তার কামরুল ইসলাম বলেন, আমি যখন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে চাকরি পেলাম, তখন দেখলাম, আমাকে তো ট্রান্সপ্লান্ট করতেই হবে। ফলে ২০০৫ সাল থেকে নিজ উদ্যোগে কিডনি রোগীদের চিকিৎসা শুরু করি। চারটি মেশিন নিয়ে ডায়ালিসিস সেটআপ তৈরি করি। ২০০৭ সালের শুরুতে দেখি ৩০ জন রোগী নিয়মিত ডায়ালিসিস করছেন। তখন আমি ঠিক করলাম, অপারেশন থিয়েটার ও আইসিইউ-র মত সেটআপ তৈরি করবো। সেটআপও তৈরি হল। এরপর একজন রোগীকে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করার প্রস্তাব দিলাম। রোগী রাজিও হয়ে গেল। আমার কাছে রোগীর রাজি হওয়াটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রথমবারেই সাফল হলাম।
২০০৭ সালে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টা সফল্য পাওয়ার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ডাক্তার কামরুল ইসলামকে।প্রায় এক হাজারের বেশি রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন তিনি। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে কোনও পারিশ্রমিক নেননি তিনি। বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত তাঁর শ্যামলী কিডনি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপিত হওয়া রোগীদের সারাজীবন বিনামূল্যে ‘ফলো আপ’-এর সুযোগও দিয়ে থাকেন ডাক্তার কামরুল ইসলাম।