পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: পাঁচ দিন হতে চললেও, ওড়িশার বালেশ্বর দুর্ঘটনার নেপথ্য কারণ নিয়ে ধন্দ কাটেনি । ট্রেনে দুর্ঘটনা প্রতিরোধী যন্ত্র কেন ছিল না, উঠছে প্রশ্ন । ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রজু করে মঙ্গলবার তদন্তে নেমেছে সিবিআই। তা নিয়ে গোড়া থেকেই আপত্তি বিরোধীদের । তবে কি অন্তর্ঘাত রয়েছে? তা না হলে স্বয়ং রেলমন্ত্রী সিবিআই তদন্ত চাইলেন কেন? কোথাও কি দুর্নীতি হয়েছে ? না কি সিবিআইকে সামনে রেখে আসলে নিরপেক্ষ তদন্তেই জল ঢালতে চাইছে কেন্দ্র। এক যোগে বিরোধীরা এই প্রশ্ন গুলি তুলেছেন। এমনকি সিবিআই তদন্তকে কটাক্ষ করে মোদিকে চিঠিও লেখেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
মোদিকে প্রশ্ন বিঁধে খাড়গে লেখেন, সিবিআইয়ের কাজ অপরাধের তদন্ত করা। রেল দুর্ঘটনার তদন্ত করার মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো তো এই কেন্দ্রীয় সংস্থার নেই। তা হলে কি দুর্ঘটনার সত্যতা আড়াল করতেই রেলমন্ত্রী সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন? নিজের অকর্মণ্যতা ঢাকতেই সিবিআইকে ঢাল করছে কেন্দ্র, এমনটাই অভিযোগ করছে কংগ্রেস । বালেশ্বরে ‘ট্রিপল ট্রেন ট্রাজেডি’ এর ঘটনায় কেন্দ্রের উদ্দ্যেশ্যে তিনটি প্রশ্ন ছুড়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা।
মঙ্গলবার দলের সদর দফতরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাতে বলেন,আসল ঘটনা থেকে চোখ সরাতেই এই ‘ষড়যন্ত্র’। রেল বিশেষজ্ঞদের বদলে তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ায় এই কথার প্রমাণ । কেন্দ্রকে তোপ দেগে তিনটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন কংগ্রেস।
এই তিন প্রশ্ন হল- ১) ২০১৮-১৯ এ রেলের ট্র্যাক মেরামত ও নয়া ট্র্যাক স্থাপনের বাজেট ছিল ৯ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা যা ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে কমে দাঁড়িয়েছিল ৭ হাজার ৪১৭ কোটি টাকায়। সিবিআই কি এই ‘বাজেট কাট’-এর প্রশ্নের রহস্য উন্মোচন করতে পারবে?
২) শুক্রবার ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই দিল্লিতে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের নেতৃত্বে রেলের ‘চিন্তন শিবির’ বসেছিল। রেলের সমস্ত জ়োনের তরফে জানানোর কথা ছিল, কোথায় সুরক্ষা ব্যবস্থার কী হাল। কিন্তু একটিমাত্র জ়োন ছাড়া আর কাউকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। তারা সকলেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন নিয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও তাঁর মন্ত্রক কি এখন রেলের সুরক্ষার থেকে প্রধানমন্ত্রীর নিত্যনতুন বন্দে ভারত ট্রেন উদ্বোধন নিয়ে বেশি ব্যস্ত? তার জবাব কি সিবিআই দিতে পারবে? ন্যাশনাল রেল সেফটি ফান্ডের তহবিল কেন ৭৯ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে তা কি সিবিআই বের করতে পারবে? প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কেন ২০,০০০ কোটি টাকার বার্ষিক বাজেট জাতীয় রেল সুরক্ষা তহবিলে বরাদ্দ করা হয়নি তা কি তদন্তে উঠে আসবে ?
৩) কেন রেল বিভাগে ৩ লক্ষেরও বেশি পদ খালি রয়েছে সিবিআই কি তার খোঁজ দিতে পারবে? কেন লোকো পাইলটদের ১২ ঘন্টার বেশি কাজ করানো হচ্ছে সিবিআই এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে? অবিলম্বে রেলের সমস্ত রুটে বাধ্যতামূলকভাবে সুরক্ষার নিশ্চিত করতে হবে, দাবি বিরোধীদের ।