এস জে আব্বাস : বাঙালি তার নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে ভাস্বর। সেই ঐতিহ্য কে বাঁচিয়ে রাখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় এবং প্রাণীসম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে রবিবার সুচনা হল খাল-বিল, চুনো মাছ, পিঠেপুলি উৎসব। পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কোবলা বাঁশদহ বিল ও চাঁদের বিল এলাকায় উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী। এছাড়াও ছিলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না, প্রাণীসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ,জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, , ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ অ্যানিমেল অ্যান্ড ফিসারি সাইন্স ডীন ডঃ তপন মন্ডল, মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা তাপস পারিয়া,জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রাম শংকর মন্ডল, বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক, তপন চট্টোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের মেন্টর উজ্জ্বল প্রামানিক, কো-মেন্টর অধ্যাপক আবুল হাশেম মন্ডল,জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মাম্পি রুদ্র, মেহেবুব মন্ডল, মহঃ ইসমাইল, মিঠু মাঝি,শিল্পপতি সুশীল মিশ্র, উৎসব কমিটির সভাপতি বিভাস বিশ্বাস, সম্পাদক তথা পূর্বস্থলি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক, প্রমুখ। কচুরিপানার তৈরি ফুলদানিতে শাপলা ফুল, উত্তরীয় ও মেমেন্টো দিয়ে অতিথিদের অভিনব অভ্যর্থনা জানানো হয়।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান,” একসময় এই বিস্তীর্ণ জলাশয় দুরাবস্থায় পড়ে ছিল। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় বাঁশদহ বড় কোবলা, বিদ্যানগর আজ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। সংস্কারের পর ভাগীরথী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত এই পাঁচ কিলোমিটার জলাশয় এখন পূর্ণাঙ্গ আকার পেয়েছে। আগামীদিনে ইকো টুরিরিজম গড়ার চিন্তাভাবনা চলছে। গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া চুনো মাছ, আবার পাওয়া যাচ্ছে। এই বিলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষদের অনেকেই রুটি রুজির পথ খুঁজে পেয়েছেন। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ আরও জানান, বিলের জলে গজিয়ে ওঠা কচুরিপানা থেকে জৈব সার তৈরির পাশাপাশি কচুরিপানা থেকে হস্তশিল্পের সামগ্রী তৈরির প্রচেষ্টা সফল হয়েছে।”এদিন উদ্বোধকের ভাষণে রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী খাল-বিল, চুনো মাছ, পিঠেপুলি ও প্রাণী পালন উৎসবের ভূয়ষী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অনেক সোসাইটি দেখেছি, কিন্তু খাল বিল নিয়ে যে সোসাইটি হতে পারে ভাবতেই পারছি না। অনেক উৎসবের থেকে এই উৎসব একেবারে অন্যরকম। তাই স্বপন বাবুকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়।
অনুষ্ঠান মঞ্চে লুপ্তপ্রায় ইতিহাস ও খাল-বিল, চুনো মাছ, পিঠেপুলি প্রভৃতি বিষয়ে একটি সুন্দর স্মরণিকা প্রকাশ করেন রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী।উৎসবে অতিথি অভ্যাগতদের আপ্যায়নের জন্য ছিল হরেক রকম ব্যবস্থা। সকালে শীতের মিঠেকড়া রোদে দাঁড়িয়ে ভাপা পিঠে, পাটিসাপটা পরে লাল চা। সমগ্র অনুষ্ঠানের আমেজের সঙ্গে এক অন্য অন্যভূতি। ভোজের আয়োজনে হরেক রকমের চূনো মাছের সঙ্গে অন্যান্য মাছের পদ। দুপুরে সাদা ভাতের সঙ্গে পালংশাকের চচ্চড়ি, ডাল, আলু ফুলকপির তরকারি, চুনোমাছ ভাজা, মাছের ঝাল, মাছের কালিয়া, টমেটোর চাটনি, নলেনগুড়ের পায়েশ। সব মিলিয়ে তৃপ্তির মধ্যাহ্নভোজন।