পুবের কলম প্রতিবেদক, বসিরহাট: ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ীর ডাকে পাওনা টাকা আনতে গিয়েছিল দাদা।আর ঘরে ফেরা হলো না দাদার। রাস্তার ধার থেকে ক্ষত-বিক্ষত রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করলো পুলিশ। সন্দেহজনকভাবে পেশায় শিক্ষক ভাইকেই ঘটনাস্হল থেকে আটক করে পুলিশ। বুধবার সন্ধায় এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় গাইঘাটার জামদানির মধুসূদনকাটি এলাকায়।
জানা যায়, মৃত যুবকের নাম মফিজুর রহমান মিন্টু। বয়স ৪৫ পেশায় সমাজসেবী। বাড়ি বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া থানার দক্ষিণ চাতরা গ্রামে। শেয়ার মার্কেটের ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। মেধাবী মফিজুর কলকাতা থেকে বিসিএ করার পর লন্ডন থেকে এমবিএ করেন। দেশে ফিরে ব্যবসার পাশাপাশি নিজের এলাকাসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ভাই মশিউর রহমান রাজু স্কুল শিক্ষক। ছোটবেলা থেকেই দুই ভাইয়ের অন্তরঙ্গতা ছিল নজরকাড়া। একই বাড়িতে বাস। আর্থিক স্বচ্ছলতায় কেউই পিছিয়ে ছিল না। জানা যায় মফিজুর এক পরিচিত জনকে টাকা ধার দিয়েছিল। সেই টাকা আদায় হচ্ছিল না। এদিন সন্ধ্যায় মফিজুরকে টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে ফোনে ডাকে ওই ব্যক্তি। ভাই মশিউরকে সঙ্গে নিয়েই ওই ব্যক্তির কাছে যায় মফিজুর। এর ঘন্টা খানেক পরে এই ঘটনা। রাত দশটা নাগাদ বাড়িতে খবর আসে।এমনটাই জানান মশিউরের স্ত্রী রেনু রহমান। তিনি প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানান। এদিকে আটক মশিউরকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি মফিজুরের স্ত্রী সহেলী আহমেদকেও গাইঘাটা থাকায় ডেকে পাঠানো হয়। তার সঙ্গে কথা বলে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে মশিউরকে গ্রেফতার করে।
যদিও মশিউরের দাবি, ওইসময় দাদার সঙ্গেই তিনি ছিলেন। দাদার উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণের সময় বাধা দিতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর প্রাণভয়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বনগাঁ মহাকুমা আদালতে তোলা হয় মশিউর রহমানকে। সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। মফিজুরের দেহটি ময়নাতদন্তের পর তার পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। দাদার খুনের আসামী হয়ে যেতে হবে ভাবতেই পারছে না শিক্ষক ভাই ও তার পরিবার। বিস্মিত গ্রামবাসীরা ও আত্মীয় স্বজনেরাও। শোকে কাতর পরিবারের সদস্যরাও। মফিজুরের দু বছরের একটি শিশু পুত্র ও মাস তিনেকের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মফিজুরের খুনের পিছনে কে বা কারা জড়িয়ে তা পরিস্কার নয়। শিক্ষক ভাইই খুন করেছে না আর্থিক লেনদেনে পাওনাদার হিসেবে মফিজুরকে নিকেশ করে দিতেই দুস্কৃতিরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার পিছনে অন্য কোন চক্রান্ত আছে কিনা পুরোটাই তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।