কায়রো, ২১ ফেব্রুয়ারি: মিশরের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস সুয়েজ খাল। কিন্তু চলতি বছর লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরাইল ও তার মিত্রদের বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে ইয়েমেনের প্রতিরোধ আন্দোলন আনসারুল্লাহর হামলার কারণে সুয়েজ কর্তৃপক্ষের আয়ে ভয়াবহ ধস নেমেছে। আগের তুলনায় ২০২৪ সালে সুয়েজ খালের আয় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আল-সিসি। গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগর দিয়ে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে আনসারুল্লাহ যোদ্ধারা। তাদের হামলার কারণে বেশ কয়েকটি বড় শিপিং কোম্পানি লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল স্থগিত করেছে। এসব জাহাজ এখন আফ্রিকা ঘুরে কয়েক হাজার মাইল পথ অতিরিক্ত পাড়ি দিয়ে এশিয়া থেকে ইউরোপ-আমেরিকায় যাচ্ছে। এর ফলে পণ্য পরিবহনের খরচ যেমন বেড়ে গেছে, তেমনই সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল কমে যাওয়ায় বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে মিশর। তেল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এক বৈঠকে মিশরীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সুয়েজ খাল থেকে মিশর প্রতি বছর প্রায় হাজার কোটি ডলার আয় করত, সেই আয় এখন ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গেছে। অথচ আমাদের কোম্পানি ও অংশীদারদের ঠিকই অর্থ দিতে হচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘ গত জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে জানিয়েছিল, সুয়েজ খাল দিয়ে চলাচলকারী জাহাজের সংখ্যা ৪২ শতাংশ কমেছে। তথ্যমতে, আগের বছরের তুলনায় সুয়েজ খাল দিয়ে সাপ্তাহিক কনটেইনার জাহাজ চলাচল কমেছে ৬৭ শতাংশ, ট্যাঙ্কারের ট্রানজিট ১৮ শতাংশ, শস্য ও কয়লা বহনকারী বাল্ক কার্গো জাহাজের ট্রানজিট কমেছে ছয় শতাংশ ও গ্যাস পরিবহন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য, লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরকে সংযুক্ত করেছে ১৮৬৯ সালে চালু হওয়া সুয়েজ খাল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই খাল থেকে মিশর প্রায় ৮৬০ কোটি মার্কিন ডলার তুলেছিল।