কৌশিক সালুই, সিউড়ি: দ্বিতীয়বারের জন্য আফগানিস্তানের মসনদে বসেছে তালিবান। সে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং আত্মীয় পরিজনদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন ভারতে বসবাসকারী আফগানি বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য– দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ভারতবর্ষে বসবাস করলেও তাদের মন প্রাণ পড়ে আছে সেখানে থাকা স্বজনদের জন্য। তালিবান সেনার কাবুল দখলের পর থেকেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট কোনও মাধ্যমেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি বীরভূমের সিউড়িতে থাকা আফগানি পরিবাররা।
প্রসঙ্গত– সিউড়ি শহরের সোনাতর পাড়া– টিকিয়াপাড়া– চৌরাস্তা মোড় প্রভৃতি এলাকায় বেশ কয়েকটি আফগানি পরিবারের বসবাস। কয়েক দশক ধরে এখানে বসবাস করছেন তারা। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভালো রোজগারের আশায় পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন আগে স্বদেশ ছেড়ে ভারতের মাটিতে বসবাস করেছেন তারা। সম্প্রতি সে দশের রাজনৈতিক অস্থির পরিবেশ বিচলিত করেছে তাদেরকে।
আত্মীয়-স্বজনদের জন্য চিন্তা করে দুশ্চিন্তার ভাঁজ কপালে। ভরসা বলতে একমাত্র উপরওয়ালা। এক সপ্তাহ আগে সব ঠিকঠাক থাকলেও তার পরেই আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দখল নিয়েছে তালিবানরা। ইতিমধ্যে সেদেশের নির্বাচিত রাষ্টÉপতি দেশত্যাগ করে পালিয়ে গিয়েছেন। তারপর থেকেই সে দেশের উদারপন্থী বাসিন্দারা চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে বিত্তশালীরা ভিনদেশে পালিয়ে যেতে পারলেও বহু মানুষজন সেখানেই থাকতে বাধ্য হয়েছেন। আর তাদের জন্যই গভীর উদ্বেগে ভিন দেশে বসবাসকারী আত্মীয়রা।
সিউড়ি শহরে বসবাসকারী আফগানি আইয়ুব খান– তার ভাইপো আমির খানের পূর্বের বাসস্থান কাবুল শহর থেকে দূরে পাহাড়ি দুর্গম এলাকা পাখতিকার এলাকায় ছিল। তাদের আত্মীয় পরিজনদের একাংশ সেখানে থাকলেও প্রথম পর্যায়ের তালিবানি শাসন হাত থেকে বাঁচতে সেই দেশ ত্যাগ করে তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতবর্ষে পালিয়ে এসে বসবাস করছেন। তালিবানের কাবুল দখলের আগে পর্যন্ত তারা আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেছেন। যদিও বর্তমানে তাদের সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। অনবড়ত খবরের চ্যানেল এর পর্দায় চোখ রেখে সে দেশের কঠিন থেকে কঠিনতর ভয়াবহতার খোঁজ নিচ্ছেন তারা। আর তাতেই তাঁরা গভীর উৎকণ্ঠা ও চিন্তার মধ্যে আছেন। আইয়ুব খান এবং আমির খান বলেন–পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় আমাদের আত্মীয়দের যেখানে বসবাস, সেখানে না আছে ঠিকঠাক বিদ্যুৎ পরিষেবা আর না আছে মোবাইলের নেটওয়ার্ক । তার মধ্যেই বর্তমানে তালিবানি শাসন শুরু হয়েছে ওখানে। কোনওভাবেই ওখানে থাকা আত্মীয়দের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে উঠতে পারছি না। একমাত্র উপরওয়ালাই জানে এর শেষ কোথায়!