নিউ ইয়র্ক, ১৬ নভেম্বর: গাজা যুদ্ধে মানবিক বিরতির আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখান করল ইসরাইল। প্রস্তাবে বেশ কয়েক দিনের জন্য গাজা উপত্যকায় সংঘাত বন্ধ ও মানবিক করিডর খোলার আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও তার সহযোগীদের পূর্ণাঙ্গ, নিরাপদ ও বাধাহীন চলাচলের নিশ্চয়তার কথা বলা হয়। তবে রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলি দূত গিলাড এরডান বলেছেন, ‘এই প্রস্তাবটি বাস্তবসম্মত নয়।’ গাজায় মানবিক বিরতি এবং আরও বেশি মানবিক করিডোর গঠনের আহ্বান জানিয়ে মাল্টার উত্থাপন করা এক প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত হয়। এ পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে প্রস্তাবের পক্ষে ১২টি দেশ ভোট দেয়। ভোটদানে বিরত ছিল আমেরিকা, ব্রিটেন ও রাশিয়া।
নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণে এরডান বলেন, ইসরাইল এ প্রস্তাব মানবে না। তার দাবি, গাজায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নে ইসরাইল সাধ্যমতো সবকিছু করছে। আরও বলেন, ‘ নিরাপত্তা পরিষদ যে প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে, তা বাস্তবতা থেকে বিচ্যুত। এ পরিষদ এখনও হামাসের চালানো হামলার নিন্দা জানাতে পারেনি। প্রস্তাবটিতে কেবল গাজার মানবিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কী কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল, তার উল্লেখ নেই।’
ইসরাইলি দূতের দাবি, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার কথা ইসরাইলকে মনে করিয়ে দিতে হবে না। ইসরাইল সব সময় আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে। বন্দিদের দেশে ফেরানোই ইসরাইলের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। লক্ষ্য পূরণে যা কিছু করার প্রয়োজন, ইসরাইল তা করবে।’ এক্স পোস্টে গিলাড লিখেছেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবটি অর্থহীন। নিরাপত্তা পরিষদ যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন, আন্তর্জাতিক আইন মেনে ইসরাইল কাজ করে যাবে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে নিরাপত্তা পরিষদ হামাসের চালানো হামলার ঘটনাকে উপেক্ষা করে যাচ্ছে। এ ঘটনায় পরিষদ থেকে নিন্দা জানানো হয়নি, এমনকি এ ঘটনার উল্লেখও করা হয় না। এটি সত্যিই লজ্জাজনক।’
উল্লেখ্য, আকাশ ও স্থলপথে ইসরাইলের হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। গাজার হাসপাতালগুলির অবস্থা চোখে দেখা যাচ্ছে না। ইসরাইলি সেনা হাসাপাতালে অনবরত বোমা হামলা চালাচ্ছে। এর ফলে রোগী, চিকিৎসক ও হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলোর জীবন এখন ঝুঁকিতে।
সূত্রের খবর, হাসাপাতালে প্রবেশ করে বহু মানুষকে চোখ বেঁধে ও নগ্ন করে হামাসের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে যায়নবাদী সেনা। কিন্তু সেই হাসাপাতালে হামাসের কোনও চিহ্ন নেই। বহু দেশ ও সংস্থা ইসরাইলকে হাসপাতালে হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।