পারিজাত মোল্লা: শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেলেন প্রসন্ন রায়। তাঁকে মিডলম্যান হিসেবে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এদিন তাঁকে জামিন দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। জমিনের জন্য এর আগে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রসন্ন। শুক্রবার ছিল শুনানি। এদিন আদালতে তাঁর হয়ে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী মুকুল রোহতগি।আদালত সূত্রে প্রকাশ , গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি এই দুই মামলাতেই জামিন পেয়েছেন প্রসন্ন রায়।
তবে এদিনের সওয়াল জবাবে সুপ্রিম কোর্ট জানায় -‘ তদন্ত যেমন চলার তেমনই চলবে। এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য ও নীলাদ্রি ঘোষ’। এই তদন্তে প্রসন্ন রায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি,-‘ তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এসপি সিনহা, জীবনকৃষ্ণ সাহা সহ শিক্ষাদফতরের একাধিক কর্তা-ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ তিনি। চার্জশিটে সিবিআই বারংবার উল্লেখ করেছে, যাঁরা অর্থের বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন তাঁরা মূলত প্রসন্ন রায়কেই টাকা দিতেন। এবং সেই টাকা পৌঁছে যেতে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকা বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তিদের হাতে’। এর ফলে তাঁর জামিন তদন্তের ক্ষেত্রে বড়সড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে এখন দেখার সিবিআই এই জামিনের বিরুদ্ধে কি অবস্থান নেয়? এর আগে মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যকে প্রাথমিকের নিয়োগ মামলায় জামিন দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
তবে এসএসসি নিয়োগ মামলায় তিনিই প্রথম জামিন পেলেন।এসএসসি নিয়োগের উপদেষ্টা কমিটির প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিংহের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই প্রসন্ন । আবার তাঁর সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল বলে শোনা গিয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চলাকালীন। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু’টি মামলার তদন্তে নেমে তাঁর নাম পেয়েছিল সিবিআই। গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলা এবং নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত প্রসন্নকে গ্রেফতারও করে সিবিআই। তবে গ্রেফতার করা হলেও প্রসন্নের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত ট্রায়াল শুরু হয়নি।
এমনকি, চার্জশিট দেওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও তার পরিপ্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপ না করায় বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন প্রসন্ন। জামিনের আবেদন করে মামলা করেন। তাঁর হয়ে ওই মামলা লড়েন সিনিয়র আইনজীবী মুকুল রোহতগি এবং আইনজীবী অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা। শুক্রবার সেই মামলারই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।প্রসন্নের আইনজীবী জানিয়েছেন , ”২০২২ সালে গ্রেফতার করা হয়েছিল। চার্জশিটও দেওয়া হয়েছিল।
অথচ তার পরও সেই চার্জশিটে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কোনও ট্রায়ালও শুরু করা যায়নি। ফলে এই অভিযুক্তেরা জানতেই পারছেন না তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিটে আসলে অভিযোগ কী। সেটা অবিচার হচ্ছে।” এই সওয়াল-জবাব চলার পরেই জামিন দেয় সুপ্রিম কোর্ট।