পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজার শরণার্থী শিবিরগুলির পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চিকিৎসক ও নার্সরা উপত্যকাটির শরণার্থী শিবির ও হাসপাতালে অবিরত কাজ করে চলেছেন। আমেরিকার এক নার্সকে উদ্ধার করা হয় হয়েছে গাজার এক শরণার্থী শিবির থেকে। গাজায় থাকাকালীন তিনি তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বিশ্বকে বলেছেন। মার্কিন নার্স এমিলি কাহালান এক সাক্ষাৎকারে জানান, গাজায় কোনও নিরাপদ স্থান নেই। শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ রয়েছেন। কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে মাত্র ৪টি টয়লেট। দিনের বেলায় মাত্র ৪ ঘন্টা সেখানে পানি আসে। এর পাশাপাশি সেখানে প্রচুর শিশুরাও রয়েছে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘এখনও গাজায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শত শত চিকিৎসাকর্মী কাজ করছেন। মৃত্যু আসবে জেনেও তারা কাজ থামাননি।’
ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্সের কর্মী এমিলিকে গত বুধবার গাজা থেকে উদ্ধার করে আমেরিকায় ফিরিয়ে আনা হয়। দেশে ফেরার অনুভূতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে থাকতে পেরে ভালো লাগছে, নিরাপদ লাগছে। তবে এখনও খুশি হতে পারছি না। কারণ এই নিরাপত্তার জন্য আমি অনেক মানুষকে পেছনে ফেলে এসেছি।
গাজায় থাকাকালীন নিরাপত্তার খাতিরে ২৬দিনে অন্তত ৫ বার তাকে অবস্থান বদলাতে হয়েছে বলে জানান এই মার্কিন নার্স। তিনি বলেন, ‘কমিউনিস্ট ট্রেনিং সেন্টারে আমার অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ৩৫ হাজার মানুষের চিকিৎসা করেছি। সেখানে বিমান হামলায় পুড়ে যাওয়া শিশুদের আসতে দেখতাম। অনেকেরই হাত-পা থাকত না। হাসপাতালে বেড না থাকায় তাদের চিকিৎসা দেওয়ায় সম্ভব হতো না।’ আরও বলেন, ‘হাসপাতালে যারা আসতেন তারা প্রায় সবাই তাজা ক্ষত, হাত-পা কাটা অবস্থায় বা আগুনে পুড়ে আসতেন।
অভিভাবকরা এসে আমাদের সাহায্য করার অনুরোধ করতেন। কিন্তু আমাদের কাছে কোনও চিকিৎসা সরঞ্জাম বা ওষুধ থাকত না।’ মার্কিন নার্স এমিলির কথায়, স্থানীয়দের সুরক্ষা ছাড়া তারা হয়তো এক সপ্তাহও বেঁচে থাকতেন না। বলেন, ‘আমাদের চারপাশে বোমা হামলা চলছিল। গাজায় কোনও নিরাপদ স্থান ছিল না।’