পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তকে জামিন দিল দিল্লি হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, অভিযোগ ও প্রমাণের মধ্যে সাধারণ জ্ঞান ও যুক্তি থাকতে হবে। নির্যাতিত ব্যক্তির বক্তব্যকে সত্য বলে মেনে নেওয়াই যথেষ্ট নয়। সাক্ষী মিথ্যা বলতে পারে, পরিস্থিতি মিথ্যা বলে না।
উল্লেখ্য, নির্যাতিতা অভিযোগ করেছিলেন, অভিযুক্তরা তাঁকে পানীয়তে নেশার দ্রব্য মিশিয়ে দিয়ে ধর্ষণ করেছে। আদালত বলেছে, মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা বা সেই পানীয়ের পরীক্ষা করা হয়নি।
অতিরিক্ত দায়রা জজ বিজয় কুমার ঝা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করতেও পুলিশকে বাধা দেন। বিচারক বলেন, আদালত যদি নির্যাতিতার বক্তব্যে সত্য পায় তাহলে, অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে। তদন্তকারী সংস্থার এই অধিকার নেই।
একইসঙ্গে, তদন্তে গাফিলতির জন্য পুলিশকে তিরস্কার করে বিচারক বলেন, তদন্তে যেভাবে অবহেলা করা হয়েছে তাতে আদালতের বিবেকে আঘাত লেগেছে। অভিযোগকারীর বক্তব্যকে সত্য বলে মেনে নিতে পারছে না তদন্তকারী সংস্থাগুলি। যদি এমন হতো তাহলে ধর্ষণ মামলার তদন্তের প্রয়োজন হতো না।
ধর্মেন্দ্র কুমার নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে একটি মেয়ে। নির্যাতিতা জানান, ২২শে মার্চ অভিযুক্ত তাঁকে সফট ড্রিংক পান করিয়ে যৌন হয়রানি করে। এরপর, অভিযুক্ত তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আবারও ধর্ষণ করে। পুলিশ সিআরপিসির ১৬৪ ধারায় নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করেছে।
এদিকে, অভিযুক্ত নির্যাতিতার বক্তব্যকে মিথ্যা, মনগড়া ও কৃত্রিম বলে বর্ণনা করে বলেছেন, নির্যাতিতার সঙ্গে তাঁর কখনও শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে টাকা আদায়ের জন্য ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা। মেয়েটির কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
অভিযুক্ত দিল্লি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। এর প্রতিবাদ করেন নির্যাতিতা। তিনি বলেন, জেল থেকে বেরোনোর পর অভিযুক্তরা তাঁকে হুমকি দিতে পারে।
এই মামলায় আসামিকে জামিন দিতে গিয়ে আদালত বলেন, আমরা মেয়েটির বক্তব্যে অসঙ্গতি দেখেছি। তিনি বক্তব্য সংশোধন করেছেন। প্রথমত, এফআইআর নথিভুক্ত করতে বিলম্ব হয়েছিল। আবার, যে কোমল পানীয়তে নেশা মেশানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, সেই কোমল পানীয়ের বিষয়ে কোনো তদন্ত বা, নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়নি।
আদালতের প্রশ্ন, কোমল পানীয় কোথা থেকে কিনলেন অভিযুক্ত? কি হল ওই বোতলের? কোন গ্লাসে পানীয় পরিবেশন করা হয়েছিল? এতে কোন নেশা মেশানো হয়েছিল? এই সব দিক খতিয়ে দেখা উচিত ছিল। মেয়েটির মাও এই মামলার একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন। তবে, তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেননি।